সংবাদ/বিবৃতি

The superiority of Muslims remain in” establishing truth and resisting against injustice”. It is a holy duty for a Muslim to do this work with his/her level best . Especially, students are perfect soldiers for this work. That is why, students are active and effective manpower of a country and a nation.

ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন এর মুহতারাম কেন্দ্রীয় সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর মেধাবী ছাত্র জি.এম. রুহুল আমীন-এর একান্ত সাক্ষাৎকার

[ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় সভাপতি জি.এম. রুহুল আমীন। তাঁর পৈত্রিক নিবাস গাজীপুর জেলায়। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনার হাতে খড়ি। অতঃপর বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে দাখিল ও আলিমের গণ্ডি পেরিয়ে বর্তমানে তিনি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। চিরবৈপ্লবিক চেতনাধারী মেধাবী এই ছাত্রনেতা শুরু থেকেই বলিষ্ঠ নেতৃত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। ওয়ার্ড-ইউনিয়ন-থানা-জেলা ও একাধিক কেন্দ্রীয় দায়িত্ব পালনের পর বর্তমানে তিনি দক্ষিণ এশিয়ার বিশুদ্ধ ধারার বৃহৎ ছাত্র সংগঠন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই বিপ্লবী ছাত্রনেতার জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে তাঁর সঙ্গে আলাপান্তে ছাত্র সমাচারে তুলে ধরেছেন ছাত্র সমাচারের সহযোগী সম্পাদক মুহাম্মাদ আব্দুল জলিল।]

ছাত্র সমাচার : আপনার প্রাথমিক জীবন ও পড়াশোনা সম্পর্কে কিছু বলুন।
জি.এম. রুহুল আমীন : আলহামদুলিল্লাহ, আমার প্রাথমিক জীবন শুরু হয় আমার পৈত্রিক নিবাস গাজীপুর জেলায়। পড়ালেখা শুরু হয় আমাদের নিজ গ্রাম মোরাদপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তারপর মাদরাসা আসিম বিন সাবিত রা. গাজীপুর থেকে দাখিল এবং টঙ্গী ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসা থেকে আলিম পাশ করে বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছি। সাথে সাথে কওমি মাদরাসাতে ফরিদাবাদ ও টঙ্গী জামিয়া নূরীয়া মাদরাসায় লেখাপড়া করেছি।

ছাত্র সমাচার : ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনে যোগদান এবং দায়িত্ব পালন সম্পর্কে বলুুন।
জি.এম. রুহুল আমীন : মাওলানা আবু জাফর মুহাম্মদ সালেহ সাহেব আমার মাধ্যমিকের একজন শিক্ষক। তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ গাজীপুর জেলার দায়িত্বশীল ছিলেন। তাঁর মাধ্যমেই সংগঠনের সঙ্গে পরিচিত হই এবং সদস্য হই। ২০০৫ সালে মরহুম পীর সাহেব চরমোনাই রহ. এর গাজীপুরের একটি মাহফিলে আলোচনা শোনার মাধ্যমে আরও বেশি প্রভাবান্বিত হয়ে সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় হই। তখন যে মাদরাসায় পড়তাম সেখান থেকে দায়িত্ব পালন শুরু। প্রথমে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। তারপর ইউনিয়ন সভাপতি, কালিয়াকৈর উপজেলায় সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি, টঙ্গী থানার সভাপতি, গাজীপুর জেলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক, অর্থ সম্পাদক, প্রশিক্ষণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক। এরপর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক, প্রশিক্ষণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এবং বর্তমান কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্বে আছি।

ছাত্র সমাচার : আরও অনেক দ্বীনি কাজ থাকা সত্ত্বেও রাজনীতিতে এলেন কেন ?
জি.এম. রুহুল আমীন : রাজনীতিতে না এসে ছাত্রসমাজ বা জাতির আশা-প্রত্যাশা পূরণ করা সম্ভব নয়। কারণ কেউ যদি নিছক একটি গ-ির মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখে, তার দ্বারা নির্দিষ্ট একটি অংশের উন্নতি সম্ভব। কিন্তু পুরো একটি সমাজের তথা সমাজের সর্বশ্রেণির মানুষের আশা, ইচ্ছা বা চাহিদার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তাছাড়া রাজনীতিতে আসার মূল কারণ হলো পরিপূর্ণ দ¦ীন পালন করার জন্য। আল্লাহ তা’আয়ালার ঘোষণা অনুযায়ী মানব জাতি ও জ¦ীন জাতিকে সৃষ্টির উদ্দেশ্য হচ্ছে তাঁর ইবাদাত। আর ইসলামী রাজনীতি তথা খিলাফাহ আলা মিনহাজিন নাবুওয়াহ প্রতিষ্ঠা ছাড়া এ উদ্দেশ্য পূরণ অসম্ভব। তাই রাজনীতিতে আসার উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ দ¦ীন পালন।

ছাত্র সমাচার : অপরাপর ছাত্রসংগঠনের ওপর ইশা ছাত্র আন্দোলনকে প্রাধান্য দেয়ার কারণ কি ?
জি.এম. রুহুল আমীন : একটি আদর্শকে সামনে রেখে প্রত্যেক ছাত্রের পড়াশোনা করা উচিৎ। যে আদর্শে আদর্শবান হয়ে সে তার পুরো জীবনকে সর্বাঙ্গে সুন্দর করে সাজাতে শিখবে এবং নিজেকে পরিশুদ্ধ করার মধ্য দিয়ে ছাত্র সমাজসহ গোটা জাতির আশা পূরণ করবে। আমার কাছে আদর্শ হিসেবে সবচেয়ে উপযুক্ত দল মনে হয়েছে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনকে তাই এই সংগঠনকে প্রাধান্য দিয়েছি।

ছাত্র সমাচার : যখন একজন ছাত্রের অধ্যবসায়ে ব্যস্ত থাকার কথা; তখন ছাত্র সংগঠনে কাজ করা তার জন্য হুমকি নয় কি ?
জি. এম. রুহুল আমীন : আদর্শিক কোন ছাত্র সংগঠন পড়ালেখার জন্য হুমকি তো নয়ই; বরং সহায়ক। যেমন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন। এখানে জনশক্তির প্রতিটি স্তরের সদস্যকে পড়াশোনা করার জন্য বিশেষ তত্ত্বাবধান করা হয়। আর প্রাকৃতিক অমোঘ নিয়মেই ছাত্রসমাজ বিপ্লবী হয়। তাই সে কোন দ্বীনি সংগঠনে সম্পৃক্ত না হলেও অন্য কোন বস্তুবাদী সংগঠনের সাথে মনের অজান্তে মিশে গিয়ে তার অধ্যবসায় ছেড়ে দেয়। কখনো কখনো সেই সংগঠন শুধু তার ক্যারিয়ার নয়; বরং তার জীবনের জন্যেও হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।

ছাত্র সমাচার : আপনার দীর্ঘ সাংগঠনিক জীবনে স্মরণীয় কোন স্মৃতি সম্পর্কে যদি বলতেন।
জি.এম. রুহুল আমীন : ব্যক্তিগত কোন সমস্যাকে সাংগঠনিক সমস্যায় রূপান্তর করা সাংগঠনিক আচার বহির্ভূত। মনে পড়ে, ২০০৫ অথবা ২০০৬ সালের কথা। আমার জেলার একজন দায়িত্বশীলের সাথে আমার মনোমালিন্য হওয়ায় বললাম, আমি সংগঠনের কোন দায়িত্বে থাকব না। তখন তিনি বললেন আসলে দায়িত্ব আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। যদি তুমি আল্লাহর কাজ থেকে অব্যাহতি নিতে পারো তাহলে আমার কোন আপত্তি নেই। সেদিনের ঐ দায়িত্বশীলের কথায় আমি দারুণভাবে প্রভাবিত হই। আর তখন সংকল্প করি, নিজেও কখনো এমনটি করবো না এবং কাউকে করতেও দেব না।

ছাত্র সমাচার : দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থেকে যদি বলতেন, একজন সংগঠকের মাঝে কী গুণ থাকা উচিৎ?
জি.এম. রুহুল আমীন : একজন ছাত্রের মূল কাজ অধ্যবসায়। তাই প্রথমত একজন ছাত্র সংগঠককে একাডেমিক, সাংগঠনিক ও দীনি জ্ঞানের ক্ষেত্রে পাণ্ডিত্য অর্জন করতে হবে। দ্বিতীয়ত উন্নত আমলের অধিকারী হতে হবে। তৃতীয়ত সংগঠন পরিচালনার দক্ষতা অর্জন করতে হবে। চতুর্থত সময়ানুবর্তিতা ও সংগঠনের জন্য সর্বোচ্চ কুরবানীর মানসিকতা থাকতে হবে।

ছাত্র সমাচার : ২০১৭ সেশনে কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়েছেন। এ পর্যায়ে এসে আপনার অনুভূতি কী?
জি.এম. রুহুল আমীন : আমি জানিনা ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করার মতো যোগ্যতা আমার আছে কিনা। তবে সংগঠনের এ পর্যায়ে এসে আমি অনুভব করছি, এত বড় দায়িত্ব পালন করা আল্লাহর খাস রহমত ও সকলের সহযোগিতা ছাড়া কখনো সম্ভব না।

ছাত্র সমাচার : ছাত্র সংগঠনের সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে আপনি বর্তমান সমাজ ব্যবস্থাকে কিভাবে দেখছেন?
জি.এম. রুহুল আমীন : দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার দিকে তাকালে সত্যিই হতাশ হতে হয়। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পার হয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষ তাদের ন্যূনতম মৌলিক অধিকার বাক-স্বাধীনতা পর্যন্ত ফিরে পায় নি। স্বাধীনতার আগে যেমন ব্যক্তি স্বাধীনতা ছিল না। স্বাধীনতা পরবর্তী বারংবার ক্ষমতার পালাবদল হলেও আজও প্রকৃত স্বাধীনতা পায়নি এদেশের মানুষ।

ছাত্র সমাচার : স্বাধীনতার মূল চেতনা; সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কী করণীয় ?
জি.এম. রুহুল আমীন : স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল চেতনা ছিলো সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা। কিন্তু স্বাধীনতার পর কিছু নামধারী সুশীল সমাজ স্বাধীনতার মূল চেতনা হিসাবে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে দাবী করে আসছে। ফলশ্রুতিতে এখনো মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। আর এই মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রয়োজন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। তা করতে হলে অবশ্যই তাকওয়াবান শাসকের প্রয়োজন।

ছাত্র সমাচার : দেশের ছাত্রসমাজের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।
জি.এম. রুহুল আমীন : প্রিয় ছাত্র বন্ধুদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, আমরা আমাদের মহান প্রতিপালকের আদেশে তাঁর জমিনে তাঁর প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছি। তাই ছাত্রাবস্থায়ই নিজেকে আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। নিজেদের আমল- আখলাক সুন্দর করার এটাই সময়। সেই সাথে পড়াশোনায় মনযোগী হয়ে জাতিকে যোগ্য ও খোদা ভীরু নেতৃত্বদানের লক্ষ্যে ইশা ছাত্র আন্দোলনের পতাকা তলে আসার আহবান জানাচ্ছি।

ছাত্র সমাচার : আপনার গুরুত্বপূর্ণ সময় থেকে আমাদেরকে সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
জি.এম. রুহুল আমীন : আপনাকেও ধন্যবাদ।

সম্পর্কিত কার্যক্রম

সম্পর্কিত কার্যক্রম

সদস্য ফরম

নিচে তথ্যগুলো দিয়ে পাঠিয়ে দিন