সংবাদ/বিবৃতি

The superiority of Muslims remain in” establishing truth and resisting against injustice”. It is a holy duty for a Muslim to do this work with his/her level best . Especially, students are perfect soldiers for this work. That is why, students are active and effective manpower of a country and a nation.

“গণতন্ত্র” শব্দটি গ্রীক শব্দ (ডিমক্র্যাসি) এর অনুবাদ। পরিভাষায় গণতন্ত্র বলা হয় জনসাধারণের প্রতিনিধি দ্বারা সাম্যের নীতি অনুসারে রাষ্ট্রশাসন করা। গণতান্ত্রিক সরকার বলা হয় কোন শ্রেণি, গোষ্ঠী বা ব্যক্তি বিশেষ কর্তৃক শাসনের পরিবর্তে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের নিয়ন্ত্রণাধীনে পরিচালিত সরকারকে।

খৃষ্টপূর্ব ৫ম ও ৪র্থ শতাব্দীতে গ্রীক নগর রাষ্ট্রগুলিতে সর্বপ্রথম গণতন্ত্রের উন্মেষ ঘটে। রোমান প্রজাতন্ত্রে জনপ্রতিনিধিত্ব নীতির উদ্ভব হয়। শাসিত ও শাসকের মধ্যে চুক্তি বিদ্যমান থাকার নীতি মধ্যযুগে উদ্ভুত। পিউরিট্যান বিপ্লব, মার্কিন স্বাধীনতা বিপ্লব ও ফরাসী বিপ্লবের প্রভাবে আধুনিক গণতন্ত্রের প্রসার ঘটে। জন লক, জে.জে রুশো ও টমাস জেফারসন গণতন্ত্রবাদের প্রভাবশালী ত্বাত্তি¡ক ছিলেন। প্রথমে রাজনৈতিক ও পরে আইন সম্পর্কীয় সমান অধিকারের দাবী উত্থাপনের ফলে গণতন্ত্র বর্ধিত হয়। পরবর্তিকালে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সাম্যের দাবী ও গণতন্ত্র সম্প্রসারণের সহায়ক হয়। প্রতিযোগিতাশীল রাজনৈতিক দলসমূহের অস্তিত্বের উপর আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিশেষভাবে নির্ভরশীল। কারণ প্রচলিত গণতন্ত্রে জনগণ কর্তৃক প্রতিনিধি নির্ধারণের জন্য নির্বাচন আবশ্যক, আর নির্বাচনের জন্য প্রতিযোগিতাশীল রাজনৈতিক দলসমূহের অস্তিত্ব আবশ্যক। গণতান্ত্রিকগণ মনে করেন একমাত্র রাজনৈতিক গণতন্ত্রের মাধ্যমেই জনগণের সুযোগ সুবিধার সাম্য রক্ষা সম্ভব। পক্ষান্তরে সমাজতান্ত্রিকদের অভিমত হল অর্থনৈতিক গণতন্ত্রই একমাত্র ভিত্তি, যার উপর সত্যিকার রাজনৈতিক গণতন্ত্রের সৌধ নির্মাণ করা যেতে পারে।

ইসলামের দৃষ্টিতে গণতন্ত্র সম্পর্কে পর্যালোচনা

ক. প্রচলিত গণতন্ত্রে রাষ্ট্র প্রধান নির্বাচনের পদ্ধতি মাত্র একটাই। আর তা হল সাধারণ নির্বাচন। পক্ষান্তরে ইসলামী খেলাফত পদ্ধতিতে রাষ্ট্র প্রধান নির্বাচনের পদ্ধতি বহুবিধ।

খ. প্রচলিত গণতন্ত্রে রাষ্ট্রের ছোট বড়, যোগ্য-অযোগ্য, বুদ্ধিমান-নির্বোধ নির্বিশেষে সকলের রায় বা মতামত সমানভাবে মূল্যায়িত হয়ে থাকে। কিন্তু রাসূল সা., খোলাফায়ে রাশেদা ও আদর্শ যুগের কর্মপন্থা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ইসলাম মতামত গ্রহণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যথাযথ কর্তৃত্বসম্পন্ন যোগ্য কর্তৃপক্ষে মতামতের মূল্যায়ন করে থাকে।
ঢাকাওভাবে সকলের মত গ্রহণ ও সকলের মতামতের সমান মূল্যায়ন দ্বারা সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছার বিষয়টি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
কুরআনের একটি আয়াতে এদিকে ইংগিত পাওয়া যায় যে, “যদি তুমি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের কথামত চল, তবে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে দেবে।” (সূরা আনআম : ১১৬)

গ. প্রচলিত গণতন্ত্রে জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎস মানা হয়। জনগণকে আইনের উৎস মানা ঈমান পরিপন্থী। কেননা ইসলামী আকীদা বিশ্বাসে আল্লাহকেই সর্বময় ক্ষমতার উৎস স্বীকার করা হয়।
কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, “তুমি বল সমস্ত কিছুর কর্তৃত্ব কার হাতে?” (সূরা মুমিনূন : ৮৮)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, “তুমি বল হে সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক আল্লাহ্! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর এবং যার নিকট থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নাও।” (সূরা আল ইমরান : ২৬)

ঘ. প্রচলিত গণতন্ত্রে জনগণকেই সকল ক্ষমতার উৎস এবং জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরকে আইন বা বিধানের অথরিটি বলে স্বীকার করা হয়। অথচ বিধান দেওয়ার অধিকার একমাত্র আল্লাহর। তাই প্রচলিত গণতন্ত্রের ধারণা ঈমান-আকীদার পরিপন্থী।
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, “কর্তৃত্বতো আল্লাহরই।” (সূরা আনআম : ৫৭)
আরো বলা হয়েছে, “আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদানুসারে যারা বিধান দেয় না তারা কাফের।” (সূরা মায়িদা : ৪৪)
আরো বলা হয়েছে, “তুমি তাদেরকে দেখনি যারা দাবি করে যে, তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং তোমার পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে তারা ঈমান এনেছে, অথচ তারা তাগুতের কাছে বিচারপ্রার্থী হতে চায়, যদিও তাদেরকে তা প্রত্যাখ্যান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।” (সূরা নিসা : ৬০)

ঙ. গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ইত্যাদি তন্ত্র-মন্ত্রকে মুক্তির পথ মনে করা এবং একথা বলা যে, ইসলাম সেকেলে মতবাদ, এর দ্বারা বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষের এই যুগে উন্নতি অগ্রগতি সম্ভব নয়- এটা কুফরী।

ইসলামী গণতন্ত্র

পূর্বের আলোচনা দ্বারা বুঝা যায় যে, ইসলামে রাষ্ট্রপ্রধান বা জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্র্দিষ্ট কোন পদ্ধতি নেই। একমাত্র জনগণ কর্তৃকই নির্বাচিত হতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। বরং যথাযথ কর্তৃত্ব সম্পন্ন জনপ্রতিনিধি দ্বারাও সরকার প্রধান নির্বাচিত হতে পারে। এর বিপরীত প্রচলিত গণতন্ত্রে রাষ্ট্রপ্রধান বা জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে একমাত্র পদ্ধতি হল জনগণ কর্তৃকই নির্বাচিত হওয়া। অতএব প্রচলিত গণতন্ত্র এবং ইসলামের মধ্যে এই একটি বিরাট মৌলিক ব্যবধান রয়েছে। তদুপরি প্রচলিত গণতন্ত্রে জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎস মানা হয় এবং জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরকে আইনের অথরিটি মনে করা হয়। আর পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে যে, জনগণকে আইনের উৎস মানা ঈমান পরিপন্থি। কেননা ইসলামী আকীদা-বিশ্বাসে আল্লাহকেই সর্বময় ক্ষমতার উৎস স্বীকার করা হয়। আর জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরকে আইন বা বিধানের অথরিটি বলে স্বীকার করা ঈমান-আকীদা বিরোধী। তাই প্রচলিত গণতন্ত্র এর ধারণা কোন ভাবেই ইসলামে স্বীকৃত নয়।

অতএব, “ইসলামী গণতন্ত্র” বলে কোন কথা ইসলামে নেই। “গণতন্ত্র” একটি ঈমান-আকীদা ও ইসলামী নীতিমালা বিরোধী ধ্যান-ধারনা সমৃদ্ধ পরিভাষা। এ পরিভাষার সাথে ইসলাম শব্দটি যোগ করলেই তা ইসলামে স্বীকৃত বলে গণ্য হতে পারে না। আর ঈমান-আক্বীদা ও ইসলামী নীতিমালা বিরোধী ধ্যান-ধারনায় সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে এটিকে কিছু ব্যাখ্যা সাপেক্ষেও ইসলামী পরিভাষা হিসেবে গ্রহণ করা ঠিক নয়।

সম্পর্কিত কার্যক্রম

সম্পর্কিত কার্যক্রম

সদস্য ফরম

নিচে তথ্যগুলো দিয়ে পাঠিয়ে দিন