সংবাদ/বিবৃতি

The superiority of Muslims remain in” establishing truth and resisting against injustice”. It is a holy duty for a Muslim to do this work with his/her level best . Especially, students are perfect soldiers for this work. That is why, students are active and effective manpower of a country and a nation.

ঢাকা কলেজ পরিচিতি

প্রতিষ্ঠার পটভূমি
১৮৪১ খ্রিস্টাব্দের ১৮ জুলাই তারিখে রবিবার শুভদিনে উপমহাদেশের প্রথম আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেব ঢাকা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয। গবেষণার ভিত্তিতে ইতিহাসবিদগণ ১৮৪১ সালের ১৮ জুলাই রবিবার শুভদিনে ঢাকা কলেজের সূচনাকাল হিসেবে উল্লেখ করেন।

প্রথম ঢাকা কলেজ ভবন
১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের পলাশীর যুদ্ধে বিজযী হয়ে ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দের বাংলা, বিহার এবং উড়িষ্যার দেওয়ানী লাভ করে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিযা কোম্পানি এবং প্রকৃতপক্ষেই তারা এ অঞ্চলের শাসকে পরিণত হয। ইংরেজরা এসময় নিজেদের শাসক হিসেবে পরিচয় না দিলেও ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে গভর্ণর ওয়ারেন হেস্টিংস এ মুখোশ খুলে দিয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর হয়ে সরাসরি এ দেশের শাসনভার গ্রহণ করে। এরপর পরবর্তী ৬২ বছর পর্যন্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শাসকগণ তাদের রাজত্বের অধিবাসীদের জন্য কোনো শিক্ষানীতি প্রণয়ন বা কোন প্রাতিষ্ঠানিক ও সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ দীর্ঘ সময়ে এ অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থা ঐতিহ্যগতভাবেই চলছিলো। অবশেষে ১৮৩০-এর দশকে সরকার এক শিক্ষানীতি গ্রহণ করে এবং সে নীতিমালায় যে শিক্ষানীতির প্রচলন হয়, তা মূলত পাশ্চাত্য বা ইংরেজি শিক্ষা নামে পরিচিতি পায়।

এ আধুনিক ধারার শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলনের জন্য সেসময়ে ঢাকাতে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠলেও- শিক্ষা প্রসারের চেয়ে, ধর্ম প্রচার সেখানে মুখ্য হয়ে ওঠে। ফলে উল্লেখ করার মতো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেখানে গঙে ওঠেনি। পরবর্তীকালে, ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২০ এপ্রিল দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কিত দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন (এবহবৎধষ ঈড়সসরঃঃবব ড়ভ চঁনষরপ ওহংঃৎঁপঃরড়হ) লর্ড বেন্টিকের নিকট একটি প্রতিবেদন পেশ করে, যেখানে বলা হয়: সরকারের তত্ত¡াবধানে বাংলা প্রেসিডেন্সির প্রধান প্রধান জনবহুল শহরে ইংরেজি সাহিত্য এবং বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য যতগুলো সম্ভব বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হোক। পরবর্তীকালে এ প্রতিবেদনের গ্রহণযোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য ঢাকার কর্মকর্তাদের নিকট এ সংক্রান্ত চিঠি প্রদান করা হলে ঢাকার সেসময়ের সিভিল সার্জন ডা: জেমস টেইলার (উৎ. ঔধসবং ঞধরষবৎ) জানান যে, এখানে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা যে কেবল উচিতই নয়, বরং এর জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকারের সুবিধা (আর্থিক এবং সামাজিক) পাওয়া যাবে। মূলত তখন থেকেই শুরু হওয়া বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ১৮৩৫ সালের ১৫ জুলাই থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় ঢাকা ইংলিশ সেমিনারী যা বর্তমানে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল নামে পরিচিত।

এ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতে একদিকে যেমন বদলে যেতে থাকে সমাজের সামগ্রিক চালচিত্র, তেমনি বিদ্যার্থীদের মানসসম্মুখে পাশ্চাত্যের কলাবিদ্যা, বিজ্ঞান এবং দর্শনকে উন্মোচিত করে। শিক্ষা এবং সমাজব্যবস্থার এ ইতিবাচক পরিবর্তনে সেসময়ের গভর্নর জেনারেল লর্ড অকল্যান্ড এবং জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন (এবহবৎধষ ঈড়সসরঃঃবব ড়ভ চঁনষরপ ওহংঃৎঁপঃরড়হ) কতগুলো কেন্দ্রীয় কলেজ প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেন। এর প্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত ব্যয়ের কথা উল্লেখ এবং কর্তৃপক্ষ দ্বারা তার যথাযথ অনুমোদনসাপেক্ষে ১৮৪১ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা ইংলিশ সেমিনারী স্কুলকে একটি কলেজে বা একটি আঞ্চলিক উচ্চতর ইংরেজি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করা হয়, যার নাম দেয়া হয় ঢাকা সেন্ট্রাল কলেজ বা সংক্ষেপে ঢাকা কলেজ এবং ঢাকা ইংলিশ সেমিনারী স্কুলের নাম দেওয়া হয় ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল। বলাবাহুল্য, এ কলেজ প্রতিষ্ঠার পরপরই বদলে যায় সমগ্র ঢাকার চালচিত্র। ঢাকা হয়ে ওঠে সমগ্র পূর্ববাংলার ইংরেজি শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র।
কেমব্রীজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং হিন্দু কলেজের শিক্ষক জে. আয়ারল্যান্ডকে ঢাকা কলেজের প্রথম প্রিন্সিপাল নিযুক্ত করা হয়। তাঁর আগমনের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যেতে থাকে ঢাকা কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক এবং শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনার ভিত্তি। সে অর্থে আয়ারল্যান্ডই ঢাকা কলেজের সত্যিকারের গুরুত্বপূর্ণ সংগঠক। তিনি কলেজের শিক্ষাদান ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনেন।

কলেজ ভবন
উনিশ শতকের ঢাকা নগরীর ইতিহাসের এক ক্রান্তিলন্তে, অনেক আশা ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে সরকারি উদ্যোগ এবং জনগণের উৎসাহ ও সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত ঢাকা কলেজ ভবনটিরও রয়েছে এক রোমাঞ্চকর ইতিহাস। শুরুতে কলেজটি পূর্বের স্থাপিত ঢাকা গর্ভনমেন্ট স্কুলের সঙ্গে সংযুক্ত করে গঙে তোলা হলেও অতি শিগগিরই এটির জন্য একটি পৃথক ভবন প্রয়োজন হয়। তবে এবিষয়ে সরকারের খুব একটা সদিচ্ছা ছিলো না। কলেজ ভবন নির্মাণের জন্য সরকার স্থানীয়ভাবে একটি কমিটি গঠন করে। তবে কলেজ ভবন তৈরি এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াবলীর দায়িত্ব তদারকি করে জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন। ভবনটির নকশা তৈরি এবং নির্মাণের দায়িত্ব পায় মিলিটারি বোর্ড। ১৮৪১ খ্রিস্টাব্দের ২০ নভে¤^র কলকাতার তৎকালীন বিশপ রেভারেন্ড ড্যানিয়েল “ঢাকা কলেজ” হিসেবে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে ঢাকা কলেজের ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো বুড়িগঙ্গার তীরে । সদরঘাটের স্থপতি কর্নেল গ্যাসর্টিন, এর নকশা করেন। খাঁটি ব্রিটিশ ঢঙে, বিলাতি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির আদলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানটি পালন করা হয়। অনুষ্ঠান উপলক্ষে রেভারেন্ড ড্যানিয়েল একটি যথাযথ এবং প্রাসঙ্গিক বক্তৃতা প্রদান করেন।

একুশ শতক
একুশ শতকে ঢাকা কলেজ, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান এবং শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাঙ্গন। এর ছাত্রসংখ্যা প্রায় ২০,০০০। এখানে এখন উচ্চ মাধ্যমিক পাঠ্যক্রমের সাথে সাথে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ১৯টি বিষয়ে শিক্ষাদান কার্যক্রম চালু রয়েছে । ছাত্রদের জন্য ঢাকা কলেজে ৭টি ছাত্রাবাস রয়েছে । এসব ছাত্রাবাসে ছাত্রদের আধুনিক এবং উন্নত জীবনযাত্রা নিশ্চিত করে থাকে।

বিভাগ সমূহ
১. বাংলা
২. ইংরেজি
৩. পদার্থবিজ্ঞান
৪. রসায়ন
৫. গণিত
৬. জীববিজ্ঞান
৭. ইতিহা
৮. রাষ্ট্রবিজ্ঞান
৯. ইসলামের ইতিহাস
১০. সমাজবিজ্ঞান
১১. মনোবিজ্ঞান
১২. ভূগোল
১৩. ব্যাবস্থাপনা
১৪. পরিসংখ্যান
১৫. হিসাববিজ্ঞান
১৬. উদ্ভিদবিজ্ঞান
১৭. গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান
১৮. অর্থনীতি
১৯. আরবি ও ইসলাম শিক্ষা
২০. ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান
২১. দর্শন।

আবাসিক হলসমূহ
ঢাকা কলেজে রয়েছে ৭টি ছাত্রাবাস। সেগুলো হল-
১. উত্তর ছাত্রাবাস
২. দক্ষিণ ছাত্রাবাস
৩. পশ্চিম ছাত্রাবাস
৪. আর্ন্তজাতিক ছাত্রাবাস
৫. ইলিয়াস হল
৬. দক্ষিণা ছাত্রাবাস
৭. শেখ কামাল ছাত্রাবাস।

সংগঠন
রাজনৈতিক সংগঠন-
১. বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
২. বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
৩. ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন
৪. সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ইত্যাদি

সাংস্কৃতিক সংগঠন-
১. চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
২. ঢাকা কলেজ বিতর্ক ক্লাব

বিজ্ঞান সংগঠন-
১. বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ
২. বাংলাদেশ ওপেন সায়েন্স অর্গানাইজেশন
৩. ঢাকা কলেজ বিজ্ঞান ক্লাব
৪. ঢাকা কলেজ নেচার স্টাডি ক্লাব

  • লেখাটি ইশা ছাত্র আন্দোলন-এর দ্বিমাসিক মুখপাত্র ‘ছাত্র সমাচার’ আগস্ট-সেপ্টেম্বর’১৫ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।

সম্পর্কিত কার্যক্রম

সম্পর্কিত কার্যক্রম

সদস্য ফরম

নিচে তথ্যগুলো দিয়ে পাঠিয়ে দিন