রয়টার্স
সিরিয়ায় নিযুক্ত জাতিসংঘ দূত স্টাফান দ্য মিসতুরা সাধারণ সিরীয়বাসীর দুর্ভোগ কমাতে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের ওপর চাপ দিতে তার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। এর আগে জেনেভায় সিরীয় সরকার ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে পরোক্ষ শান্তি আলোচনা শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়। গত সোমবার মিসতুরা বলেন, বিরোধী হাই নেগোসিয়েশনস কমিটি (এইচএনসি) খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলেছে। তারা বলছে, বৈঠকের পাশাপাশি শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ কতটা যৌক্তিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে, তা দেখার অধিকার সিরীয়বাসীর রয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমি যখন সিরীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলেছি, তখন তারা আমাকে বলেছে কেবল সম্মেলন নয়, আমরা বাস্তবেও কিছু দেখতে চাই। এইচএনসি পুনর্দখলকৃত শহরগুলোতে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর বিষয়ে জোর দিয়ে আসছে। এ প্রেক্ষাপটে মিসতুরা মঙ্গলবার সকালে আসাদ সরকারের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এবং বিকেলে এইচএনসি’র সঙ্গে বৈঠক করেন। অন্যদিকে, জেনেভায় শুরু হওয়া শান্তি আলোচনা আগামী ছয় মাস ধরে চলবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ আলোচনার মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় প্রায় পাঁচ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটবে- এমনটাই ধারণা বিশ্লেষকদের। মিসতুরাও আরও বলেন, আলোচনা জটিল ও কঠিন হবে। তবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ আলোচনার মাধ্যমে কিছু অর্জন করাও সম্ভব হবে। এইচএনসি মিসতুরার ইতিবাচক বার্তাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, তারা সিরীয় সরকারের দূত বাশার আল-জাফরির সঙ্গে মিসতুরার বৈঠকের ফলাফল জানার অপেক্ষায় রয়েছেন। এইচএনসি’র মুখপাত্র সালেম আল মেসলেট গত সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, আমি বিশ্বাস করি, বিশেষ দূতের কাছ থেকে আমরা ইতিবাচক বার্তা পাবো। আমরা এই ফলাফল জানার অপেক্ষায় আছি। এদিকে, জাতিসংঘের সিরিয়া বিষয়ক দূত গত রোববার দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত বন্ধে ব্যাপক কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। ওয়াশিংটন শান্তি আলোচনায় অংশ নিতে উভয় পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের বাইরে একটি পবিত্র মাজারের কাছে পৃথক বিস্ফোরণে ৭১ জন নিহত হয়েছে। ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে। ইইউ’র পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান ফেডারিকা মগারিনি বলেন, সিরিয়ায় সংঘাত বন্ধে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করার প্রচেষ্টা ব্যাহত করার লক্ষ্যে এই হামলা চালানো হয়েছে। জেনেভায় জাতিসংঘের বিশেষ দূত স্টেফান দ্য মিসতুরা প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও বিরোধীদের হাই নেগোসিয়েশন (এইচএনসি) কমিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে পৃথক আলোচনা করেন। তিনি বলেন, তিনি আশাবাদী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তবে উভয় পক্ষ দীর্ঘ ও তিক্ত সংঘাত বন্ধের আগে চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন। এইচএনসি প্রতিনিধি গত শনিবার জেনেভা পৌঁছান এবং আসাদ অপরাধ করা বন্ধ না করলে আলোচনা ত্যাগ করার হুমকি দেয়। এইচএনসির মহিলা মুখপাত্র বাসমা কদমানি বলেন, মানবিক বিষয় নিয়ে ব্যাপক অগ্রগতি হবে এ বিষয়ে লিখিত অঙ্গীকারের পর আমরা জেনেভা এসেছি। তবে দামেস্ক প্রতিনিধিদলের প্রধান আলোচক বাশার আল জাফরি বিরোধীরা আলোচনার ব্যাপারে আন্তরিক নয় উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা জানি না অপর পক্ষে কে আছেন। তারা এখনও চূড়ান্ত তালিকা দিতে পারেননি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এক বিবৃতিতে এই সুযোগ কাজে লাগাতে উভয় পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি শর্ত না দিতে বিরোধীদের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে তিনি বিরোধীদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষা ব্যবহার করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, আসাদ বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দাদের অনাহারে রেখেছে।