সংবাদ/বিবৃতি

The superiority of Muslims remain in” establishing truth and resisting against injustice”. It is a holy duty for a Muslim to do this work with his/her level best . Especially, students are perfect soldiers for this work. That is why, students are active and effective manpower of a country and a nation.

Britain

ইরাকে অব্যাহত গোলযোগ, আরব বসন্তের অনুরণন, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) উত্থান ইত্যাদির মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য তার ইতিহাসের সবচেয়ে টালমাটাল সময় পাড়ি দিচ্ছে। আঞ্চলিক রাষ্ট্রগুলোর কাঠামো ভেঙ্গেচুরে গেছে এবং উদ্বাস্তু সংকট সৃষ্টি হয়েছে যা এখন ইউরোপের সীমান্ত, প্রতিষ্ঠান এবং সহিষ্ণুতার ঐতিহ্যের প্রতি চাপ সৃষ্টি করেছে। উপসাগরের দেশগুলো যে এ পরিস্থিতিতে শঙ্কা অনুভব করবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু পাশ্চাত্যের আমরা তাদের সাহায্য করছি না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা এশিয়ার প্রতি এক হঠকারী বৈদেশিক নীতি গ্রহণ করেছেন যা এ অঞ্চলের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা হ্রাস সূচিত করেছে। সিরিয়ায় নির্মমতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি রিয়াদে তার সফরকালে অপেক্ষাকৃত কম উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

ইরানের সাথে গত বছরের পারমাণবিক চুক্তি সত্ত্বেও ইরান ছায়াযুদ্ধ অব্যাহত রেখেছে যে কারণে ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, বাহরাইন ও ইয়েমেনে অশান্তি বিরাজ করছে। তেহরানের হস্তক্ষেপ শুধু পাশ্চাত্যের স্বার্থের প্রতিই হুমকি নয়, উপরন্তু তা এ অঞ্চলের একমাত্র স্থিতিশীল এলাকা উপসাগরের প্রতিও হুমকি।

যুক্তরাজ্য বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই এবং এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা আনার প্রষ্টোয়ও নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে। যাহোক, এ প্রচেষ্টায় আমাদের বন্ধু প্রয়োজন এবং সেসব বন্ধুর জানা দরকার যে ব্রিটেন তাদের বিশ্বস্ত মিত্র। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন উপলক্ষে উল্লেখ করেছেন যে সউদি সন্ত্রাসবিরোধী গোয়েন্দা দফতর ব্রিটিশ নাগরিকদের জীবন রক্ষা করেছে। আমাদের তার প্রতিদান দেয়া দরকার।

উপসাগরে ব্রিটেনের ইতিহাস দীর্ঘদিনের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে সউদি আরব ব্রিটেনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এটা ভোলা সহজ যে সম্পদ সত্ত্বেও এ সব দেশের অনেকেরই জনসংখ্যা অল্প। এসব লোক যে ভয়ংকর পরিবেশে বাস করে তাতে খুবই যুক্তিসঙ্গত যে তারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করে। এর ফলে তাদের আন্তর্জাতিক বন্ধুদের নেয়া প্রতিটি পদক্ষেপের মধ্যে তারা মিত্রদের দৃঢ়সংকল্প ও অঙ্গীকারের শক্তির বিষয়টি যাচাই করে দেখে। এ কারণেই সউদি আরবে যুক্তরাজ্যের অস্ত্র বিক্রি বিষয়ে (যে অস্ত্র তখন ইয়েমেনে চলমান অভিযানে ব্যবহৃত হয়েছিল) অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির তদন্ত এত অনাকাংঙ্খিত ও স্ব পরাজয়মূলক। বহুমুখী নিরাপত্তা উদ্বেগ, তার সাথে এ তদন্তের সম্মুখীন সউদি আরব ও অন্যান্য আঞ্চলিক মিত্রদের সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় আমাদের অভিন্ন স্বার্থ রক্ষায় তাদের প্রচেষ্টা সমর্থনের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্য তাদের ক্ষমা করে দেয়া যেতে পারে।

ইতিমধ্যে আল-কায়েদার ঘাঁটিতে পরিণত হওয়া ইয়েমেনে শিয়া সংখ্যালঘু হুছিরা বাইরের তাৎপর্যপূর্ণ সমর্থন ও ইরানের উৎসাহে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সরকারকে অকেজো ও উৎখাত করার চেষ্টা চালিয়েছে। আর তা করতে গিয়ে তারা সউদি সীমান্তে উদ্বেগজনক অস্থিতিশীলতা ও বড় ধরনের মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে। সউদি নেতৃত্বাধীন জোট হুছিদের অগ্রগতি রোধ ও তা পাল্টে দিতে কিভাবে অভিযান চালাচ্ছে তা নিয়ে আমরা যাই ভাবি না কেন, এ হস্তক্ষেপের ব্যাপারে জাতিসংঘের বৈধতার কথা আমাদের উল্লেখ করতে হবে,  আমাদের বুঝতে হবে সউদি আরব ও অন্যান্য আঞ্চলিক মিত্ররা এক্ষেত্রে কেন এত কঠোর জবাব দেয়ার প্রয়োজন বোধ করল, স্বীকার করতে হবে এ অভিযান পরিচালনার জটিলতা।

সউদি আরব বুঝতে পেরেছে যে তারা যাচাইয়ের আওতায় আছে, আর তা তাদের কাছে অত্যন্ত স্পর্শকাতর। উপসাগর হচ্ছে এক বৃহৎ বদ্ধ খাঁচা। গত দশকে এ অঞ্চলে আমাদের মিত্ররা জাতীয় স্বার্থের উপরে বিশেষ স্বার্থ গ্রুপগুলোকে জড়িত করার আমাদের আগ্রহে অতিশয় ক্রুদ্ধ হয়েছে। আমাদের মিত্ররা যদি বুঝতে পারে যে তারা তাদের এলাকাকে স্থিতিশীল করার যে প্রচেষ্টা নিয়েছে আমরা তার সমালোচনায় নিয়োজিত, এ অঞ্চলে ব্রিটেনের জন্য তার পরিণতি মারাত্মক হবে। ব্রিটেনের পদক্ষেপে যে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা শূন্যতা দেখা দেবে তা পূরণের বিশাল সুযোগ দেখছে আমাদের প্রতিযোগীরা।

অন্যদিকে যারা আমাদের ক্ষতি চায় তারা উপসাগরের স্থিতিশীলতা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমাদের অঙ্গীকার দুর্বল হয়ে পড়তে ও ভেঙ্গে যেতে দেখে খুশি হবে। এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা রক্ষায় সাহায্যের সর্বোত্তম পথ যদি বিবেচনা করে দেখা যায় তা হচ্ছে আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তার উন্নয়ন এবং আমাদের নাগরিকদের জীবন রক্ষা। আমাদের উচিত উপসাগরে আমাদের বন্ধু ও মিত্রদের সাথে সমঝোতা ও পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে সম্প্রীতি রক্ষা ও সহযোগিতা করা । উপসাগরে দীর্ঘস্থায়ী স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কার এবং এ অঞ্চলের অনেকেই তা ভালো করে জানে।

বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যের বিপজ্জনক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এসবের কোনো কোনোটি এখন বিলাসিতা মনে হবে। তবে উপসাগরীয় দেশগুলো যত নিরাপদ বোধ করবে সংস্কার ও তারপর স্থিতিশীলতার দীর্ঘমেয়াদী সম্ভাবনা তত উজ্জ্বল হবে।

বিপরীতে যদি তারা অনিরাপদ বোধ করে, বৃহত্তর অশান্তি ও গোলযোগ দেখা দিতে পারে। অত্যন্ত ওয়াকেবহাল পর্যবেক্ষকরাও মনে করেন যে এ অঞ্চলে সর্বশেষ আমাদের যা প্রয়োজন তা হল আরব বসন্ত। যুক্তরাজ্য, সরকার ও এমপিরা মনস্থির করুনঃ তারা নিরাপত্তা না নিরাপত্তাহীনতায় ভূমিকা রাখতে চান।

সূত্র : দি টেলিগ্রাফ

*নিবন্ধকার লেঃ জেনারেল স্যার সাইমন মায়াল যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সাবেক সিনিয়র উপদেষ্টা।

সম্পর্কিত কার্যক্রম

সম্পর্কিত কার্যক্রম

সদস্য ফরম

নিচে তথ্যগুলো দিয়ে পাঠিয়ে দিন