সউদি বাদশাহ সালমান দেশটির সরকারে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন। বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়েছেন এবং কয়েকটি মন্ত্রণালয় পুনর্গঠন করেছেন। সবচেয়ে বড় পরিবর্তনটি হয়েছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে। বর্ষীয়ান জ্বালানিমন্ত্রী আলী আল-নাইমিকে সরিয়ে তার জায়গায় দায়িত্ব দেয়া হয়েছে খালিদ আল-ফালিহকে। আল-নাইমি ১৯৯৫ সাল থেকে তেলমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত শনিবার এক রাজকীয় ফরমানে এই পরিবর্তনের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে একে জ্বালানি, শিল্প ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় নাম দেয়া হয়েছে। আল-ফালিহ এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন। ডিক্রিতে বলা হয়, ফালিহকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া পানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় বিলুপ্ত করা হয়েছে। এখন কৃষি মন্ত্রণালয়ই এই দুটি বিভাগ দেখবে। জ্বালানি, তেল, পানি, পরিবর্তন, বাণিজ্য, সমাজকল্যাণ, স্বাস্থ্য, হজ ইত্যাদি মন্ত্রণালয়েও পরিবর্তন আনেন বাদশাহ। অন্যদিকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে আলী আল নাইমিকে দেওয়া হয়েছে রাজকীয় আদালতের উপদেষ্টার দায়িত্ব। বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়াহকে দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পদ থেকে ফাহাদ আল-মুবারককে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আহমেদ আল-খুলাইফি। হজ মন্ত্রণালয়ের নামেও পরিবর্তন এনেছে সউদি আরব, নতুন নাম হয়েছে হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়। এই মন্ত্রণালয়ে মোহাম্মদ বিনতিন স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন বন্দর আল-হাজ্জারের জায়গায়। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কে বিলুপ্ত করে নবগঠিত মন্ত্রণালয়ের নাম দেওয়া হয়েছে পানি, পরিবেশ ও কৃষি মন্ত্রণালয়। শ্রম ও সামাজিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রণালয়েকে শ্রম ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে।
এদিকে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত তেল রপ্তানিকারক দেশ সউদি আরব তেলের উপর নির্ভরশীলতা অবসানে গত মাসে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রমের ঘোষণা দেয়। এরই মধ্যে তেল রপ্তানির আয় কমে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলো থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সউদি আরব। ১৯৯০ সালে ইরাকের কুয়েত দখলের সময় ঋণ নেয়ার ২৫ বছর পর তেল রপ্তানির আয় কমে যাওয়ায় ফের ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছে দেশটি। শুধু গত বছরই তাদের তেল রপ্তানি থেকে আয় কমেছে ২৩ শতাংশ। আলী আল-নাইমি ২০ বছর ধরে বিশ্ব তেল বাজারে সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত ছিলেন। উল্লেখ্য, আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত শনিবার জাতীয় টেলিভিশনে বাদশা মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদলের ঘোষণা দেন। যাতে বাদ পড়েন ২০ বছরের বেশি সময় ধরে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা আলী আল-নাইমি। মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে আলী আল নাইমিকে দেওয়া হয়েছে রাজকীয় আদালতের উপদেষ্টার দায়িত্ব। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত তেল রপ্তানিকারক দেশ সউদি আরব তেলের উপর নির্ভরশীলতা অবসানে গত মাসে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রমের ঘোষণা দেয়। তেলের দাম পড়তির মধ্যেও গত বছর দেশটির রাজস্বের ৭০ শতাংশ আসে এই পণ্য থেকে।
সূত্র : বিবিসি