ইসলাম বিরোধী জাতীয় শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন বাতিল না করলে কঠোর আন্দোলন
-সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্র ঐক্য
‘সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্র ঐক্য’-এর নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চিন্তা-চেতনা, মননশীলতা ও ভাবধারার শিক্ষা ব্যবস্থা চালু থাকবে এটাই স্বাভাবিক। অন্যদিকে সুশিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড এবং উন্নতির সোপান। আর এটা একমাত্র ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা সমাজ থেকে সকল প্রকার অন্যায়, অবিচার, অনৈতিকতা ও অস্থিরতা দূর করে ইসলামী শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য যে বর্তমান সরকার কর্তৃক প্রণীত শিক্ষানীতি ও পাঠ্যসূচিতে তার ব্যবস্থা রাখা হয় নি বরং ধর্মীয় শিক্ষাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। পাশাপাশি ইসলামী মূল্যবোধ ও দেশাত্ববোধক মুসলিম লেখকদের লিখনীসমূহ বাদ দিয়ে হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদীদের ধর্মবিদ্বেষী এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী লেখাসমূহ অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
বক্তার বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পূর্বে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল যে, তারা ক্ষমতায় আসলে ইসলাম বিরোধী কোন আইন করবেন না। কিন্তু পরিতাপের বিষয় যে, সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে একটি চিহ্নিত মহল বিতর্কিত শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে জাতিকে ধর্মহীন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তারা বলেন, ধর্মীয় শিক্ষা বাদ দিযে যারা আলোকিত মানুষ ও আদর্শ সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখেন তারা ধর্মবিদ্বেষীদের দালাল।
তাই অবিলম্বে ইসলাম বিরোধী শিক্ষানীতি, শিক্ষা আইন বাতিল ও বিতর্কিত সেক্যুলার পাঠ্যসূচি সংশোধন করে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার সর্বক্ষেত্রে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। ২৪ মে মঙ্গলবার বিকাল ৩ টায় সমমনা ইসলামী ছাত্র সংগঠনসমূহের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্র ঐক্যের ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
‘সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্র ঐক্য’-এর মুখপাত্র মুহা. নাছির উদ্দিন খান-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্র ঐক্যের প্রেসিডিয়াম সদস্যবৃন্দ। তারা হলেন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল ইসলাম আল-আমীন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ হারুনুর রশীদ, ইসলামী ছাত্র খেলাফত বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজ-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাসউদ খান, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুল কাদীর ও বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ
মুহাম্মদ আল-আমীন।
উপস্থিত ছিলেন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর সেক্রেটারি জেনারেল শেখ ফজলুল করীম মারুফ, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ-এর সেক্রেটারি মুহাম্মদ ওমর ফারুক, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস-এর সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আব্দুর রহীম সাঈদ, ইসলামী ছাত্র খেলাফত বাংলাদেশ-এর সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আবুল হাশিম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজ-এর মহাসচিব মুহাম্মদ
নূরুজ্জামান, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া-এর অর্থ সম্পাদক রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া-এর প্রধান সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুর রহমান ও বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র আন্দোলন-এর সাধারণ সম্পাদক হাফেজ নেয়ামতুল্লাহ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ‘সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্র ঐক্য’-এর মুখপাত্র মুহা. নাছির উদ্দিন খান।
বক্তব্যে পাঁচটি দাবী উপস্থাপন এবং কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়-
১. শিক্ষানীতি ২০১০ এবং তা বাস্তবায়নে প্রণীত শিক্ষা আইন ২০১৬ এর খসড়া অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
২. প্রাক-প্রাথমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৩. শিক্ষানীতি, শিক্ষাআইন ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন কার্যক্রমে অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষাবিদ এবং ইসলামিক স্কলারগণের পরামর্শ নিতে হবে।
৪. পাঠ্যসূচি থেকে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক সকল গল্প, প্রবন্ধ ও কবিতা বাদ দিতে হবে।
৫. শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকে মুসলিম ঐতিহ্য ও ভাবধারার কবি-সাহিত্যিকগণের গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
কর্মসূচিসমূহ :
১. ২৫ মে থেকে ১৫ জুন ২০১৬ পর্যন্ত দেশব্যাপী গণস্বাক্ষর কর্মসূচি।
২. ২৬ মে ২০১৬, সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন।
৩. ৩০ মে জাতীয় রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদদের সাথে মতবিনিময়।
৪. ২ জুন ২০১৬, সিলেট বিভাগীয় ছাত্র গণসমাবেশ। পর্যায়ক্রমে সকল বিভাগগুলোতে বিভাগীয় ছাত্র গণসমাবেশ করা হবে।
৫. ৩ জুন ২০১৬, বাদ জুমা বাইতুল মোকাররমের উত্তর গেইটে বিক্ষোভ মিছিল।
পরিশেষে সভাপতির মোনাজাতের মাধ্যমে সম্মেলন শেষ করা হয়।