আইনুদ্দীন আল আজাদ ছিলেন বিপ্লবী সংগঠক ও সুস্থ সাংস্কৃতিক আন্দোলনের রাহবার
-ইশা ছাত্র আন্দোলন
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ইসলামী সংগিত সম্রাট “আইনুদ্দীন আল আজাদের জীবনকর্ম ও রাজনৈতিক দর্শন” শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও আজাদ সন্ধ্যার আয়োজন করে ইশা ছাত্র আন্দোলন।
জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেন, আজাদ স্বল্পায়ুর এক মহৎ ও কর্মমুখর জীবন অতিবাহিত করেছেন। তিনি মূলত একজন বিপ্লবী সংগঠক ছিলেন। তাঁর তারুণ্যের পুরোটা ব্যয় করেছেন ইসলামী বিপ্লবের জন্য। আর পরিণত বয়সে কাজ করেছেন সুস্থ সংস্কৃতির ধারা নির্মাণে।
তিনি আরো বলেন, মাত্র ১৬ বছর বয়সে আজাদ বাংলাদেশের ইসলামী রাজনীতির পুরোধা শায়েখ ফজলুল করীম (রহ.)-এর সংস্পর্শে আসেন এবং নিজের মাঝে গণমানুষের জন্য কাজ করার তাগাদা অনুভব করেন। ১৯৯৫ সালে ১৭-১৮ বছর বয়সে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর সদস্য ফরম পূরণের মাধ্যমে নিজেকে ইসলামী বিপ্লবের একজন সার্বক্ষণিক কর্মী হিসেবে করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি সংগঠনের ঝিনাইদহ জেলা আহবায়ক মনোনীত হন। রাতদিন পরিশ্রম করে বছরান্তে পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠন করেন। তিনি জেলা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পর্যায়ক্রমে তিনি জেলা সভাপতি, কেন্দ্রীয় সদস্য, প্রশিক্ষণ সম্পাদক, এবং কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে পরিবর্তনের জন্য সংগ্রামের অন্যতম সম্মোহনী উপাদান হিসেবে তিনি সংগিতকে বেছে নেন। কিন্তু তিনি শুধু সংগিত নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েননি।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, আইনুদ্দীন আল আজাদ যে বোধ লালন করতেন, তা হল বিপ্লব ও পরিবর্তন। এ জন্য মানুষকে জাগ্রত করতে যেমন সংগিত প্রয়োজন তেমনি মানুষকে সঠিক ধারায় ঐক্যবদ্ধ করতে শক্তিশালী সংগঠনেরও প্রয়োজন। এজন্য তাঁর মাঝে শিল্পী ও সংগঠকের দু’টি সত্ত্বা মিশে ছিল। তিনি গানের স্বরলিপি লিখতেন, সুর করতেন, গাইতেন। তার গানে ও সুরে সম্পূর্ণটা ঝুড়ে ছিল ইসলামী বিপ্লবাকাংঙ্খা। অন্যদিকে ইসলামী সংগিতে তিনি বৈচিত্র্যময় বিষয় ও হৃদয়কাড়া সুরের সৃষ্টি করতে পেরেছেন। ফলে তার বহু গান সব দল মতের মানুষের কণ্ঠে অনুরণিত হয়।
কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মারুফ-এর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল এম. হাছিবুল ইসলাম-এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভা ও আজাদ সন্ধ্যায় প্রধান অতিথি হিসেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী উপরোক্ত কথা বলেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমাদ আব্দুল কাইয়ুম, ইসলামী যুব আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি কে.এম. আতিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর সাবেক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, জন্মলগ্ন থেকে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন সর্বশ্রেণির ছাত্রদের মাঝে বিপ্লবী চেতনা ও স্ব-স্ব ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল তৈরির কাজ করে আসছে। আইনুদ্দীন তার সংগিত সাধনার চেতনা পেয়েছেন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন থেকে। এই চেতনা তাকে অবিরাম লিখতে, বলতে ও কাজ করে যেতে শক্তি ও সাহস যুগিয়েছে। কাজেই আইনুদ্দীন আল আজাদ ছাত্র আন্দোলন-এরই উপহার। তিনি শিল্পী ও সংস্কৃতি কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “ইসলামের আদর্শিক ও রাজনৈতিক বিজয়ের লক্ষে আপনাদেরও শিল্পী ও সংগঠকের যুগপৎ দায়িত্ব পালন করতে হবে। একটির অজুহাতে অন্যটি হতে দূরে থাকার সুযোগ নাই।”