ইশা ছাত্র আন্দোলন-এর ২৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী সমাবেশ অনুষ্ঠিত:
আদর্শ বঞ্চিত ছাত্রদের মুক্তির ঠিকানা ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন -পীর সাহেব চরমোনাই
দেশে আজ চরম সংকটময় মুহূর্ত বিরাজমান। দেশের মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। শিক্ষাক্ষেত্রে চলছে চরম দুর্নীতি, অনিয়ম। শিক্ষা নিয়ে একটি মহল ব্যবসা শুরু করেছে। মাদরাসার ছাত্রদের ভর্তি বৈষম্য, অযাচিত কোটা প্রথা, শিক্ষা উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি ও শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকাসহ বিভিন্নভাবে এদেশের মানুষ শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত। এর দায় সরকার কখনও এড়াতে পারবে না। আজকের ছাত্ররাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই ছাত্রদেরকে যদি সৎ, দক্ষ ও আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা না হয় তাহলে বাংলাদেশের মানুষের জন্য ভবিষ্যতে আরও কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। সুতরাং সরকারকে অতিদ্রুত শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আজ ২২ আগস্ট’১৪ শুক্রবার ইশা ছাত্র আন্দোলন-এর ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সংগ্রামী আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) উপর্যুক্ত কথা বলেন।
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে বেলা ০৩টায় পুরানা পল্টনস্থ হাউস বিল্ডিং চত্বরে কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ আরিফুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মাদ নুরুল ইসলাম আল-আমীনের সঞ্চালনায় ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, এদেশের ছাত্রদের আদর্শনির্ভর ছাত্র রাজনীতির চর্চা করার জন্য ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন ব্যতিত আর কোন সংগঠন নেই। অন্য সংগঠনগুলো প্রায় সবাই হল দখল, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী, ইভটিজিং ধর্ষণসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে গেছে। যার কারণে এখন আদর্শ বাঞ্চিত ছাত্রদের একমাত্র ঠিকানা হয়ে দাড়িয়েছে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন।
পীর সাহেব চরমোনাই আরও বলেন, সরকার জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার মাধ্যমে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার টুটি চেপে ধরতে চায়, যার বহিঃপ্রকাশ ইনকিলাব পত্রিকার বার্তা সম্পাদককে গ্রেফতার। তিনি অনতি বিলম্বে ইনকিলাবের বার্তা সম্পাদকসহ সকলের মুক্তির দাবি করেন।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মুহতারাম মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাও. গাজী আতাউর রহমান, ইশা ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ আবদুর রহমান গিলমান, জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মুহাম্মাদ নুর-উন-নাবী, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুহাম্মাদ রুহুল আমিন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মাদ আজিজুল হক, অর্থ সম্পাদক মুহাম্মাদ হাছিবুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক এস.এম এমদাদুল্লাহ ফাহাদ, বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদ আ হ ম আলাউদ্দিন প্রমুখ। এছাড়াও ইসলামী আন্দোলন ও ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে সভাপতি বলেন, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আজ শিক্ষকদের দ্বারা শিক্ষার্থীরা লাঞ্চিত। ক্ষমতাসিনদের ক্যাডার বাহিনীর কাছে জিম্মি হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সবকিছু থেকে বঞ্চিত। এসব কিছু দেখে মনে হয় মাতৃভূমি যেন আজ স্বাধীনতা বিরোধীদের দখলে। অন্যদিকে চলছে মাদকের ছড়াছড়ি যা আজ সহজলভ্য, সহজ দ্রব্য। আর এদেশের মেরুদ- ভেঙ্গে দেয়ার জন্য বিদেশী দালালরা তা ছাত্রদের হাতে তুলে দিচ্ছে। ছাত্র তরুণ ও যুব সমাজকে মাদকের ভয়াল ছোবল থেকে বাঁচানো আমাদের দায়িত্ব। তিনি হুশিয়ারি উচ্চারন করে বলেন, যারা এ সমস্ত দেশ, জাতি ও মুসলমানদের ধ্বংসের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত তারা অতিসত্যর ভুল পথ থেকে ফিরে আসুন নয়ত আগামী দিনে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন দেশের ছাত্রদের সাথে নিয়ে এমন দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে যে তারা পালাবার পথ ও খুঁজে পাবে না।
সমাবেশ শেষে এক বর্ণাঢ্য র্যালী রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পল্টন হাউস বিল্ডিং চত্বরে এসে সমাপ্ত হয়।