আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গত মঙ্গলবার রাতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। সংঘাত এড়াতে আগামী ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আমিনুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে গতকাল বুধবার সকালে সিন্ডিকেটের জরুরি সভা শেষে এ ঘোষণা দেয়া হয়। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল ও স্লোগান অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল ইসলাম আল-আমীন, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জি. এম. রুহুল আমীন ও সেক্রেটারি জেনারেল শেখ ফজলুল করীম মারুফ এক যুক্ত বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্রলীগ তাদের দৈনন্দিন কর্মসূচি’ হিসেবে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া করেছে, ককটেল বিনিময় করেছে, গুলিবিনিময় করছে, এটা এখন আর নিন্দার বিষয় না! যতদিন ছাত্রলীগ ছিলো ততদিন এইসব ছিলো, যতদিন ছাত্রলীগ থাকবে ততদিনই এইসব থাকবে বলে নিশ্চিত ধরে নেয়া যায়।
আমরা কথা বলছি প্রশাসনের ভুমিকা নিয়ে। যদি আপনাদের দৃষ্টিতে “ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া করা, ককটেল বিনিময় করা ও গুলিবিনিময় করা“ দোষনীয় হয় তাহলে সেই অন্যায় করেছে ছাত্রলীগ। কিন্তু আপনারা তার শাস্তি দিচ্ছেন সাধারন ছাত্র-ছাত্রীদের।
আপনারা নোটিশ জারী করেছেন যে, সবাইকে হল ছাড়তে হবে। মাননীয় ভিসি, আপনারা উপরতলার মানুষ। আপনারা হয়তো জানেন না যে, এখন মাসের শেষের দিক। এখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে টাকা-পয়সা থাকে না, যারা টিউশনি করে পড়াশোনার খরচ নির্বাহ করেন তারা যখন তখন পড়ানো বন্ধ করতে পারেন না। অধিকাংশ শিক্ষার্থীর শহরে থাকার কোন ব্যবস্থা নাই। তাদের একমাত্র আবাসস্থল হল থেকে আপনারা এখন যে বের করে দিলেন, এরা এখন যাবে কোথায়? এদের বাড়িতে যাওয়ার খরচ দেবে কে? এদের টিউশনের পড়ানোর দায়িত্ব নেবে কে? ছাত্রলীগের করা অন্যায়ের কারণে এরা এখন চোখে অন্ধকার দেখছে। অথচ ছ্ত্রালীগের নেতারা ঠিকই হলে থেকে যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবী জানাচ্ছি যে, ছাত্রলীগকে আপনারা পুরস্কৃত করবেন না শাস্তি দেবেন সেটা আপনাদের মুরোদের বিষয়। মুরোদ থাকলে শাস্তি দেবেন আর না থাকলে চোখ বন্ধ করে থাকবেন। কিন্তু দয়া করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোন বিপদে ফেলবেন না। আপনাদের সোনার ছেলেদের কর্মের ফল সাধারন শিক্ষার্থীদেরকে বহন করতে বাধ্য করবেন না।