কথিত শান্তি সমাবেশের নামে নিরপরাধ নিরীহ মাদরাসা শিক্ষার্থী হাফেজ রেজাউলকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা রাজপথে নির্মমভাবে খুন করেছে। এই খুনের সঙ্গে ছাত্রলীগ যুবলীগের সন্ত্রাসীরা জড়িত তা এখন জাতির কাছে স্পষ্ট। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেশের ছাত্রসমাজ প্রত্যাশীত কোন পদক্ষেপ দেখেনি। যা ছাত্রসমাজের মাঝে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার জন্ম দিয়েছে। দেশের প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের কাছে ন্যায়বিচারের অধিকার রাখে। এ হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক বিবেচনায় না দেখে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খুনিদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করতে হবে এবং হাফেজ রেজাউলের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অন্যথায় দেশব্যাপী ছাত্রসমাজ গণ আন্দোলন গড়ে তুলবে।
গত ২৮ জুলাই’২৩ কথিত শান্তি সমাবেশে যুবলীগ-ছাত্রলীগ কর্তৃক নৃশংসভাবে নিহত নিরীহ মাদরাসা শিক্ষার্থী হাফেজ রেজাউল করিম এর হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে আজ ২৪ই আগস্ট’২৩ বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটায় রাজধানীর প্রেসক্লাব চত্বরে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য-এর প্রধান সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস এর কেন্দ্রীয় সভাপতি পরিষদ এর সদস্য মুহাম্মাদ কামাল উদ্দীন এর সঞ্চালনায় আয়োজিত ছাত্র সমাবেশ এ সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের মুখপাত্র ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ এসব কথা বলেন।
এসময় সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশন আওয়ামী সরকারের পকেট কমিশনে পরিণত হয়েছে। বর্তমান কমিশনের মাধ্যমে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। দুর্নীতি দমন কমিশন দুর্নীতি রোধের পরিবর্তে দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। ক্যাম্পাসের ভিসি পদের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদকে বর্তমান সরকার দলীয় পদে পরিনত করছে। তিনি দেশের নানাবিধ সংকটের কথা স্মরণ করিয়ে
সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য যে কোন জাতীয় সংকটে ঐক্যবদ্ধ কাজ করবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
ক্যাম্পাসের ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে ছাত্রলীগ যেখানে খুন, ধর্ষণ, টেন্ডারবাজি চাঁদাবাজি সেখানেই ছাত্রলীগ। একটি ছাত্র সংগঠনের পক্ষে নির্মমভাবে অন্য ছাত্রকে হত্যা করা সম্ভব নয়, কিন্তু ছাত্রলীগ বারবার শিক্ষার্থীদের খুন ও নির্যাতন করে পশু চরিত্রের পরিচয় দিচ্ছে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছাত্রলীগকে সম্মিলিতভাবে বয়কট করতে হবে।
এ সময় তিনি ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকার পরিষদ সহ সকল ছাত্র নেতাদের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ক্যাম্পাসে যখন ছাত্রলীগ অস্ত্রের মহড়া দেয়, শিক্ষার্থীদের নিপীড়ন করে তখন প্রশাসন কাঠের চশমা পড়ে থাকে। কিন্তু বিরোধী দল ও মত দমনে প্রশাসন আওয়ামীলীগের মত আচরণ করে৷ যা প্রশাসনের জন্য লজ্জার ও ধিক্কারের এবং জাতির জন্য উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার। তিনি এ সময় প্রশাসনকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহবান জানান এবং অনতি বিলম্বে সকল ছাত্র নেতাদের মুক্তি দেয়ার দাবি জানান।
ওলামায়ে কেরামের মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, চোর ডাকাতদের আদালতে তোলা হয় জামাই আদর করে আর উলামায়ে কেরামকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে অপমান করা হয়। এই অপমান বাংলাদেশের ছাত্র জনতা কখনোই সহ্য করবেনা।
কর্মসূচি
আগামী ০৩ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ে স্মারকলিপি পেশ ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি নিজাম উদ্দিন আল আদনান, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ খালেদ সাইফুল্লাহ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানা জুয়েল, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মোল্লা মুহাম্মাদ খালিদ সাইফুল্লাহ , বাংলাদেশ মুসলিম ছাত্রলীগ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ নূর আলম, বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মুহাম্মদ প্রিন্স, ভাসানী ছাত্র পরিষদ এর আহবায়ক আহাম্মেদ শাকিল , বাংলাদেশ ছাত্র মিশন এর কেন্দ্রীয় সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ মিলন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজ এর মহাসচিব বিএম আমির জিহাদী, বাংলাদেশ কওমী ছাত্র ফোরাম এর সদস্য সচিব জামিল সিদ্দিকীসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।