সংবাদ/বিবৃতি

The superiority of Muslims remain in” establishing truth and resisting against injustice”. It is a holy duty for a Muslim to do this work with his/her level best . Especially, students are perfect soldiers for this work. That is why, students are active and effective manpower of a country and a nation.

রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র : দেশের জন্য ক্ষতিকর উন্নয়ন প্রকল্প

আ হ ম আলাউদ্দীন

২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছিল সেখানে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সঞ্চালনের একটি প্রস্তাব ছিল। এই প্রস্তাবের ভিত্তিতে ২০১২ সালে সুন্দরবনের নিকটবর্তী রামপালে দু’টি ৬৬০ ইউনিট মিলে মোট ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক তাপ-বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য ভারতের ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার করপোরেশনের (এনটিপিসি) সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের আগেই ২০১০ সালের ২৭ ডিসে¤^র কোনোরূপ পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ না করেই প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের আদেশ জারি করা হয় এবং অবকাঠামো উন্নয়নের রূপরেখা চ‚ড়ান্তকরা হয়।

আর ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে Final Report on Environmental Impact Assessment (EIA) of 2 × (500-660) MW Coal Based Power Plant to be constructed at the location of Khulna নামে সেই কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইআইএ পিডিবির ওয়েবাসাইটে ঝুলানো হয়েছে। ১৫ ফেব্রæয়ারি ২০১৩ এর মধ্যে মতামত চাওয়া হয়েছে। এভাবে পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই প্রকল্পের স্থান চ‚ড়ান্তকরণ থেকে শুরু করে বিনিয়োগ চুক্তি সম্পন্ন করে ফেলার পর পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য তৈরি ইআইএর উদ্দেশ্য ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে সচেতন মহলে। রামপালে বিদ্যুতকেন্দ্র দেশের জন্য কতটুকু উন্নয়ন বয়ে আনবে সেটি এনভায়র্নমেন্টাল ইমপেক্ট অ্যাসেসমেন্ট (ইআইএ) বিশ্লেষণের মাধ্যমে এখন আমরা দেখব।

সাধারণত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র মারাত্মক পরিবেশ দূষণ ঘটায় বলে সংরক্ষিত বনভূমি ও বসতির ১৫ থেকে ২০ কিমি এর মধ্যে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয় না। ইআইএ রিপোর্ট অনুসারে প্রস্তাবিত ১৩২০ মেগাওয়াট রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পটি সুন্দরবন থেকে মাত্র ১৪ কিমি দূরে যা সরকার নির্ধারিত সুন্দরবনের চারপাশের ১০ কিমি এনভায়রনমেন্টালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া (ইসিএ) থেকে ৪ কিমি বাইরে বলে নিরাপদ হিসেবে দাবি করা হয়েছে। অথচ যে ভারতীয় এনটিপিসি বাংলাদেশে সুন্দরবনের পাশে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করতে যাচ্ছে সেই ভারতেরই ওয়াইল্ড লাইফ প্রটেকশান অ্যাক্ট ১৯৭২ অনুযায়ী, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৫ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে কোন বাঘ/হাতি সংরক্ষণ অঞ্চল, জৈব বৈচিত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বনাঞ্চল, জাতীয় উদ্যান, বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য কিংবা অন্যকোন সংরক্ষিত বনাঞ্চল থাকা চলবে না। অর্থাৎ ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসিকে বাংলাদেশে সুন্দরবনের যত কাছে পরিবেশ ধ্বংসকারী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে দেয়া হচ্ছে, তার নিজ দেশ ভারতে হলে সেটা করতে পারতো না! আবার সুন্দরবন থেকে দূরত্ব আসলেই ১৪ কিমি কিনা সেটা নিয়েও বিতর্ক আছে, অনেকেই বলছেন সুন্দরবন থেকে আসলে দূরত্ব ৯ কিমি। খোদ ইআইএ রিপোর্টের এক জায়গায় বলা হয়েছে প্রকল্পের স্থানটি একসময় একেবারে সুন্দরবনেরই অংশ ছিল, সেটলার বা বসতি স্থাপনকারীরা বন কেটে আবাসভূমি তৈরি করেছে। (ইআইএ, পৃষ্ঠা-২০৮)

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিকর প্রভাব
সাড়ে চার বছর সময় জুড়ে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে ৬৬০ মেগাওয়াটের দুইটি বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট নির্মাণ হবে। এই সময়ে গোটা এলাকার পরিবেশ, কৃষি, মৎস ও পানি সম্পদের উপর নিম্নলিখিত প্রভাবসমূহ পড়বে:
১) ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য রামপালে ১৮৩৪ একর কৃষি, মৎস চাষ ও আবাসিক এলাকার জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। যদিও ভারতে একই আকারের একটি প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে ৭৯২ একর যার বেশির ভাগটাই এক ফসলি কিংবা অনুর্বর পতিত জমি। (রায়গড় ইআইএ, এক্সিকিউটিভ সামারি, পৃষ্ঠা ১)।

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইআইএ রিপোর্ট অনুসারে প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকার (১৮৩৪ একর) ৯৫ শতাংশই কৃষি জমি ও চারপাশের ১০ কিমি ব্যাসার্ধের এলাকার (স্টাডি এলাকা) ৭৫ শতাংশ কৃষি জমি যেখানে নিম্নোক্ত হারে চিংড়ি অথবা ধান সহ অন্যান্য ফসল উৎপাদন করা হয় পৃষ্ঠা-১৩৫, ১৯৪, ১৯৭, ১৯৮, ২০৪) :
ক) বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১০ ব্যাসার্ধের মধ্যে বছরে ৬২,৩৫৩ টন এবং প্রকল্প এলাকায় ১২৮৫ টন ধান উৎপাদিত হয়।
খ) বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১০ ব্যাসার্ধের মধ্যে বছরে ১,৪০,৪৬১ টন অন্যান্য শস্য উৎপাদিত হয়।
গ) প্রতি বাড়িতে গড়ে ৩/৪টি গরু, ২/৩টি মহিষ, ৪টি ছাগল, ১টি ভেড়া, ৫টি হাস, ৬/৭টি করে মুরগী পালন করা হয়।
ঘ) বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১০ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে বছরে ৫২১৮.৬৬ মেট্রিক টন এবং প্রকল্প এলাকায় (১৮৩৪ একর) ৫৬৯.৪১ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়।

বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রকল্প এলাকায় (১৮৩৪ একর) ধান, মাছ, গৃহপালিত পশুপাখি ইত্যাদির উৎপাদন ধ্বংস হবে ¯^ীকার করে ইআইএ রিপোর্টে আশাবাদ প্রকাশ করা হয়েছে: সঠিক পরিবেশ ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করা হলে এর বাইরের ১০ কিমি এলাকার মধ্যে কোন ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে না(!)। যদিও বিভিন্ন ধরণের নির্মাণ কাজ, ড্রেজিং, বিভিন্ন ধরণের রাসায়নিক ও তৈল নি:সরণ ইত্যাদির ফলে পশুর ও মাইদারা নদী, সংযোগ খাল, জোয়ার-ভাটার প্লাবণ ভূমি ইত্যাদি এলাকার মৎস আবাস, মৎস চলাচল ও বৈচিত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশংকাও প্রকাশ করা হয়েছে। পৃষ্ঠা-২৬৬, ২৬৭)

২) নির্মাণের মালামাল ও যন্ত্রপাতি সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নদী পথে পরিবহন করা হবে। ফলে বাড়তি নৌযান চলাচল, তেল নি:সরণ, শব্দদূষণ, আলো, বর্জ্য নি:সরণ ইত্যাদি পরিবেশ আইন অনুসারে নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে সুন্দরবনের ইকো সিস্টেম বিশেষ করে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, ডলফিন, ম্যানগ্রোভ বন ইত্যাদির উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে বলে আশংকা করা হয়েছে ইআইএ রিপোর্টে। (পৃষ্ঠা-২৬৮)

৩) নির্মাণ কাজের যন্ত্রপাতি ও যানবাহন ব্যবহারের ফলে শব্দ দূষণ হবে। এক্ষেত্রেও নির্মাণ পর্যায়ে শব্দ দূষণের মাত্রা এবং সুন্দরবন ও প্রকল্পের চারপাশের পরিবেশের উপর কি প্রভাব পড়বে তা যাচাই করা হয়নি ইআইএ রিপোর্টে।
৪) প্রকল্পের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, যানবাহন, জেনারেটর, বার্জ ইত্যাদি থেকে তেল পুড়িয়ে ক্ষতিকর কার্বন ডাইঅক্সাইড ও নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড নির্গত হবে। এই কার্বন ও নাইট্রোজেনের পরিমাণ কি হবে ও ক্ষতিকর প্রভাবই বা ৪/৫ বছরের নির্মাণ পর্যায়ে কিরূপ হবে তার কোন পর্যালোচনা এই রিপোর্টে করা হয় নি।

৫) নির্মাণ পর্যায়ে বিভিন্ন ধরণের কঠিন বর্জ্য তৈরি হবে যা সঠিক পরিবেশ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা না হলে পরিবেশ এর উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে বলে আশংকা করা হয়েছে।
৬) ড্রেজিং এর ফলে নদীর পানি ঘোলা হবে। ড্রেজিং সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা না হলে তেল গ্রীজ ইত্যাদি নি:সৃত হয়ে নদীর পানির দূষিত হবে।

৭) পশুর নদীর তীরে যে ম্যানগ্রোভ বনের সারি আছে তা নির্মাণ পর্যায়ে জেটি নির্মাণসহ বিভিন্ন কারণে কাটা পড়বে। নদী তীরের ঝোপঝাড় কেটে ফেলার কারণে ঝোপ ঝাড়ের বিভিন্ন পাখি বিশেষ করে সারস ও বক জাতীয় পাখির বসতি নষ্ট হবে।
(সূত্র : রামপাল ইআইএ, Impacts: pre-construction and construction stages, পৃষ্ঠা ২৬৩-২৬৮)

বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালন পর্যায়ে থাকার সময়কার প্রভাব
পরিচালন পর্যায়কে ২৫ বছর ধরা হয়েছে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইআইএ রিপোর্টে। এই ২৫ বছর ধরে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সুন্দরবনের পরিবেশের উপর নিম্নলিখিত প্রভাব ফেলবে:

১) ক্ষতিকর সালফার ও নাইট্রোজেন গ্যাস
ইআইএ রিপোর্ট অনুসারে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৪২টন বিষাক্ত সালফার ডাইঅক্সাইড (SO2) ও ৮৫টন বিষাক্ত নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড(NO2) নির্গত হবে। ফলে ¯^াভাবিকভাবেই এই বিপুল পরিমাণ বিষাক্ত গ্যাস সুন্দরবনের বাতাসে SO2 ও NO2 এর ঘনত্ব বর্তমান ঘনত্বের তুলনায় কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়ে গোটা সুন্দরবন ধ্বংস করবে। কিন্তু রিপোর্টে এর মাত্রা পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৭ নির্ধারিত সীমার মধ্যে দেখানোর জন্য ইআইএ রিপোর্টে একটা জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে- পরিবেশগত ‘স্পর্শকাতর’ এলাকার মানদণ্ডের বদলে সুন্দরবনের জন্য ‘আবাসিক ও গ্রাম’ এলাকার মানদণ্ড বেছে নেয়া হয়েছে!

ইআইএ রিপোর্টে বলা হয়েছে, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত SO2 এর কারণে নভে¤^র থেকে ফেব্রæয়ারি মাস পর্যন্ত সময়ে সুন্দরবনের বাতাসে SO2 এর ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে ৮ মাইক্রোগ্রাম থেকে বেড়ে ৫৩.৪ মাইক্রোগ্রাম হবে যা পরিবেশ আইন ১৯৯৭ (ECR 1997) অনুযায়ী আবাসিক ও গ্রাম্য (residential and rural) এলাকার জন্য নির্ধারিত মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৮০ মাইক্রোগ্রাম এর থেকে অনেক কম।
একইভাবে সুন্দরবন এলাকার NO2 এর ঘনত্ব ১৬ মাইক্রোগ্রাম তিনগুণ বেড়ে থেকে ৫১.২ মাইক্রোগ্রাম হলেও তা নিরাপদ মাত্রার মধ্যেই থাকবে বলে দাবি করা হয়েছে। (ইআইএ, পৃষ্ঠা-২৭৮)

কিন্তু প্রশ্ন হলো সুন্দরবন কি আবাসিক বা গ্রাম এলাকা? নাকি পরিবেশগতভাবে স্পর্শকাতর একটি এলাকা? তাহলে সুন্দরবন এর মতো পরিবেশগত স্পর্শকাতর একটি এলাকার মানদণ্ড হিসেবে আবাসিক ও গ্রাম এলাকার জন্য নির্ধারত মানদণ্ড বেছে নেয়া হলো কেন? পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৭ ঘাটতেই কারণটা বোঝা গেল। এই আইন অনুসারে পরিবেশগত স্পর্শকাতর এলাকার বাতাসে SO2 ও NO2 এর ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে ৩০ মাইক্রোগ্রাম (30g/m3) এর চেয়ে বেশি থাকা যাবে না। যেহেতু পরিবেশগত স্পর্শকাতর এলাকার জন্য নির্ধারিত মানদণ্ডের (30g/m3) সাথে তুলনা করলে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প কোনভাবেই জায়েজ করা যাবে না। সেজন্য পরিকল্পিত ভাবেই পুরো রিপোর্ট জুড়ে সুন্দরবনের বাতাসে বিষাক্ত গ্যাসের ঘনত্বের মানদণ্ড হিসেবে আবাসিক ও গ্রাম এলাকার জন্য নির্ধারিত মানদণ্ডকে ব্যাবহার করা হয়েছে!

২) পশুর নদী থেকে পানি প্রত্যাহার
ইআইএ রিপোর্ট অনুসারে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যাবহারের জন্য পশুর নদী থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৯১৫০ ঘনমিটার করে পানি প্রত্যাহার করা হবে। কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে শীতলিকরণসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের পর অবশিষ্ট পানি পরিশোধন করে ঘণ্টায় ৫১৫০ ঘনমিটার হারে আবার নদীতে ফেরত দেয়া হবে। ফলে নদী থেকে প্রতি ঘণ্টায় কার্যকর পানি প্রত্যাহারের পরিমাণ হবে ৪০০০ ঘনমিটার। ইআইএ রিপোর্টে এভাবে পশুর নদী থেকে ঘণ্টায় ৪০০০ মিটার পানি প্রত্যাহারের ফলে পানির লবণাক্ততা, নদীর পলি প্রবাহ, প্লাবন, জোয়ার ভাটা, মাছসহ নদীর উদ্ভিদ ও প্রাণী জগৎ ইত্যাদির উপর কেমন প্রভাব পড়বে তার কোন বিশ্লেষণ করা হয়নি। এই যুক্তিতে যে ৪০০০ ঘনমিটার পানি পশুর নদীর শুকনো মৌসুমের মোট পানি প্রবাহের ১ শতাংশেরও কম। দুর্ভাবনার বিষয় হলো, প্রত্যাহার করা পানির পরিমাণ ১ শতাংশেরও কম দেখানোর জন্য পানি প্রবাহের যে তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে তা সা¤প্রতিক সময়ের নয়, ৮বছর আগে, ২০০৫ সালে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ণ বোর্ড কর্তৃক সংগৃহীত। (পৃষ্ঠা ২৮৫)
অথচ এই ইআইএ রিপোর্টেই ¯^ীকার করা হয়েছে, নদীর উজানে শিল্প, কৃষি, গৃহস্থালিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে নদী থেকে দিনে দিনে পানি প্রত্যাহারের পরিমাণ বাড়ছে যার ফলে শুকনো মৌসুমে দিন দিন পানির প্রবাহ কমে যাচ্ছে যা পশুর নদীর জন্যও একটি চিন্তার বিষয়। (পৃষ্ঠা ২৫০)

৩) পানি দূষণ
কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পানি নির্গমণ হলে তাতে বিভিন্ন মাত্রায় দূষণকারী উপাদান থাকাটাই ¯^াভাবিক, যে কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বেলায় ‘শূন্য নির্গমণ’ বা ‘জিরো ডিসচার্জ’ নীতি অবল¤^ন করা হয়। যে এনটিপিসি রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে, সেই এনটিপিসি যখন ভারতে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করে তখন ‘জিরো ডিসচার্জ’ নীতি অনুসরণ করে। যেমন: ভারতের ছত্তিশগড়ের রায়গড়ের কাছে ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইআইএ রিপোর্টে বলা হয়েছে: “তবৎড় উরংপযধৎমব পড়হপবঢ়ঃং রিষষ নব ভড়ষষড়বিফ”. (রায়গড় ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইআইএ, এক্সিকিউটিভ সামারি, পৃষ্ঠা ই-১২)
কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পানি নির্গমণ করা হলে নির্গত পানির তাপমাত্রা, পানি নির্গমণের গতি, পানিতে দ্রবীভূত নানান উপাদান বিভিন্ন মাত্রায় পানি দূষণ ঘটাবে যা গোটা সুন্দরবন এলাকার পরিবেশ ধ্বংস করবে।

৪) বিষাক্ত ছাই
এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বছরে ৪৭ লক্ষ ২০ হাজার টন কয়লা পুড়িয়ে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টন ফ্লাই অ্যাশ ও ২ লক্ষ টন বটম অ্যাশ উৎপাদিত হবে। এই ফ্লাই অ্যাশ, বটম অ্যাশ, তরল ঘনীভূত ছাই বা ¯øারি ইত্যাদি ব্যাপক মাত্রায় পরিবেশ দূষণ করে কারণ। এতে বিভিন্ন ভারী ধাতু যেমন আর্সেনিক, পারদ, সীসা, নিকেল, ভ্যানাডিয়াম, বেরিলিয়াম, ব্যারিয়াম, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম, সেলেনিয়াম, রেডিয়াম মিশে থাকে। (পৃষ্ঠা-২৮৭-২৮৮)
উৎপাদিত ছাই যেন পরিবেশ দূষণ না করে সেজন্য ফাই অ্যাশ চিমনি দিয়ে নির্গত হওয়ার আগেই ইএসপি সিস্টেমের মাধ্যমে ধরে রাখা হবে যদিও এরপরও ‘কিছু উড়ন্ত ছাই’ বাতাসে মিশবে বলে ¯^ীকার করা হয়েছে ইআইএ রিপোর্টে: (পৃষ্ঠা ২৭১, ২৮৫)

আরো ভয়ংকর ব্যাপার হলো, একদিকে বলা হয়েছে এই বিষাক্ত ছাই পরিবেশে নির্গত হলে ব্যাপক দূষণ হবে (পৃষ্ঠা ২৮৭) অন্যদিকে এই ছাই দিয়েই প্রকল্পের মোট ১৮৩৪ একর জমির মধ্যে ১৪১৪ একর জমি ভরাট করার পরিকল্পনা করা হয়েছে! (পৃষ্ঠা ২৬৩) এই বর্জ্য ছাই এর বিষাক্ত ভারী ধাতু নিশ্চিতভাবেই বৃষ্টির পানির সাথে মিশে, প্রকল্প এলাকার মাটি ও মাটির নিচের পানির স্তর দূষিত করবে যার প্রভাব শুধু প্রকল্প এলাকাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।
উৎপাদিত বর্জ্য ছাই সিমেন্ট কারখানা, ইট তৈরি ইত্যাদি বিভিন্ন শিল্পে ব্যাবহারের সম্ভাবনার কথা ইআইএ রিপোর্টে বলা হলেও আসলে কোন কারখানায় এর আদৌ কোন ব্যবহার হবে এরকম কোন নিশ্চিত পরিকল্পনা করা হয়নি। বড় পুকুরিয়ার মাত্র ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকেই উৎপাদিত ছাই এরই উপযুক্ত ব্যবহার বাংলাদেশে হচ্ছে না। বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত দৈনিক ৩০০ মেট্রিকটন বর্জ্য ছাই কোন সিমেন্ট কারখানায় ব্যবহারের বদলে ছাই এর পুকুর বা অ্যাশ পন্ডে গাদা করে রেখে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটানো হচ্ছে। ২০০৬ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত চার বছরে ২ লক্ষ ৬০ হাজার ৬১৩ টন ছাই পুকুরে জমা করে পু কুরের প্রায় পুরোটাই ভরে ফেলা হয়েছে।

৫) শব্দ দূষণ
কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টারবাইন, জেনারেটর, ক¤েপ্রসার, পাম্প, কুলিং টাওয়ার, কয়লা উঠানো নামানো, পরিবহন ইত্যাদির কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও যানবাহন থেকে ভয়াবহ শব্দ দূষণ হয়। সুন্দরবন এলাকায় রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনার সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের বেধে দেয়া মাত্রার (দিনের বেলা ৫০ ডেসিবল, রাতে ৪০ ডেসিবল) চেয়ে বেশি শব্দ তৈরি হবে বলে ইআইএতে ¯^ীকার করা হলেও বলা হয়েছে সবুজ বেষ্টনী তৈরি করার কারণে প্রকল্পের সীমার বাইরে উচ্চ শব্দ যাবে না।

সবুজ বেষ্টনি আসলে কতটুকু তৈরি করা হবে বা হলেও সেটা কতটা শব্দদূষণ প্রতিরোধ করতে পারবে এবং সেই সাথে সবুজ বেষ্টনির বাইরে কয়লা পরিবহন, ওঠানো নামানো, ড্রেজিং, স্থল ও নদীপথে বাড়তি যান চলাচল ইত্যাদির কারণে যে শব্দ দূষণ হবে তার ফলাফল সুন্দরবন ও আশপাশের পরিবেশের উপর কি হবে! ইআইএ রিপোর্টে বেষ্টনির বাইরের শব্দ দূষণকে অ¯^ীকার করা হয় নি, যদিও এর পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে কোন কথা বলা হয় নি।

৬) স্বাস্থগত ঝুঁকি
এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত সালফার, নাইট্রোজেন, কার্বন ইত্যাদির বিভিন্ন যৌগ কিংবা পারদ, সীসা, ক্যাডমিয়াম, ব্যারিয়াম ইত্যাদি ভারী ধাতুর দূষণ ছাড়াও কুলিং টাওয়ারে ব্যাকটেরিয়া সংক্রামণের কারণেও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক আকারে নিউমোনিয়া জাতীয় রোগ ছড়িয়ে পড়ে।

সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে কয়লা পরিবহনের ফলাফল
সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে প্রায় সারা বছর ধরে হাজার হাজার টন কয়লা পরিবহনকারী জাহাজ চলাচল করে গোটা সুন্দরবনের পরিবেশ ধ্বংস করে ফেলবে। বড় জাহাজে করে কয়লা সুন্দর বনের আকরাম পয়েন্ট পর্যন্ত আনতে হবে, তারপর আকরাম পয়েন্ট থেকে একাধিক ছোট লাইটারেজ জাহাজে করে কয়লা মংলাবন্দরে নিয়ে যেতে হবে। সরকারের পরিবেশ সমীক্ষাতেই ¯^ীকার করা হয়েছে, এভাবে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে কয়লা পরিবহনকারী জাহাজ চলাচল করার ফলে-
১) কয়লা পরিবহনকারী জাহাজ থেকে কয়লার গুড়া, তেল, ময়লা আবর্জনা, জাহাজের দূষিত পানিসহ বিপুল পরিমাণ বর্জ্য নি:সৃত হয়ে নদী-খাল-মাটিসহ গোটা সুন্দরবন দূষিত করে ফেলবে।
২) কয়লা পরিবহণকারী জাহাজ ও কয়লা লোড-আনলোড করার যন্ত্রপাতি থেকে দিনরাত ব্যাপক শব্দ দূষণ হবে।
৩) সুন্দরবনের ভেতরে আকরাম পয়েন্টে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে কয়লা উঠানো নামানোর সময় কয়লার গুড়া, ভাঙা কয়লা পানিতে/মাটিতে পড়ে- বাতাসে মিশে মাটিতে মিশে ব্যাপক পানি-বায়ু দূষণ ঘটাবে।
৪) রাতে জাহাজ চলের সময় জাহাজের সার্চ লাইটের আলো নিশাচর প্রাণীসহ সংরক্ষিত বনাঞ্চল সুন্দরবনের পশু-পাখির জীবনচক্রের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে ইত্যাদি
৫) চলাচলকারী জাহাজের ঢেউয়ে দুইপাশের তীরের ভূমি ক্ষয় হবে।

প্রস্তাবিত রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইআইএ রিপোর্টের এই সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা থেকে স্পষ্ট যে, ইআইএ রিপোর্টে ভুল মানদণ্ড ব্যবহার, ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে দেখানো, কোন কোন ক্ষেত্রে ক্ষতির মাত্রার কোন পর্যালোচনাই না করা এমনকি খোদ ইআইএ রিপোর্টে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, পরিচালানা ও কয়লা পরিবহণের ফলে সুন্দরবনের উপর সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে এমন সব তথ্য বেরিয়ে এসেছে যা প্রস্তাবিত কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পকে পরিবেশগত বিবেচনায় অগ্রহণযোগ্য বিবেচনা করার জন্য যথেষ্ট।

বস্তুত, এর চেয়ে আরো সামান্য কারণে খোদ এনটিপিসিরই ১৩২০ মেগাওয়াটের একটি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবেশগত অনুমোদন দেয় নি ভারতের কেন্দ্রীয় গ্রিন প্যানেল। গত ৮ অক্টোবর ২০১০ তারিখে ভারতের দ্যা হিন্দু পত্রিকায় প্রকাশিত ঘঞচঈ’ং পড়ধষ-নধংবফ ঢ়ৎড়লবপঃ রহ গচ ঃঁৎহবফ ফড়হি বা ‘মধ্যপ্রদেশে এনটিপিসির কয়লা ভিত্তিক প্রকল্প বাতিল’ শীর্ষক খবরে বলা হয়: জনবসতি সম্পন্ন এলাকায় কৃষিজমির উপর তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র গ্রহণযোগ্য হতে পারে না বলে ভারতের কেন্দ্রীয় গ্রীন প্যানেল মধ্যপ্রদেশে ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার করপোরেশন (এনটিপিসি) এর ১৩২০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়নি। অথচ বাংলাদেশে সেই এনটিপিসিকে ১৩২০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের সুযোগ দেয়া হচ্ছে।

অন্যান্য ক্ষতিকর বিপর্যয়
মানবিক বিপর্যয়-১৮৩০ একর ধানী জমি অধিগ্রহণের ফলে ৮০০০ পরিবার উচ্ছেদ হয়ে যাবে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্ম সংস্থান হতে পারে সর্বোচ্চ ৬০০ জনের, ফলে উদ্বাস্তু এবং কর্মহীন হয়ে যাবে প্রায় ৭৪০০ পরিবার। শুধু তাই নয় আমরা প্রতি বছর হারাবো কয়েক কোটি টাকার কৃষিজ উৎপাদন।

পরিবেশগত বিপর্যয়
কয়লাভিত্তিক যেকোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পে অন্য যে কোনো প্রকল্পের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। বিশেষত ভষ্মিভূত কয়লার ছাই এবং উৎপন্ন গ্যাসের ফলে বায়ু ও পানি দূষণের যুগপৎ প্রভাবের কারণে এই ক্ষতি হয়। এ ধরনের প্রকল্প এলাকার আশেপাশের অঞ্চলে এসিড বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে যা বৃক্ষ এবং বনাঞ্চলের ¯^াভাবিক বৃদ্ধিকে ব্যাহত করে ভয়ানক মাত্রায়। যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা যায় যে, ২০১০ সালে দেশটির মোট কার্বনডাই অক্সাইডের ৮১ ভাগ উদগীরণ করেছে কয়লাভিত্তিক প্রকল্পগুলো, যা থেকে মোট শক্তির মাত্র ৪১ ভাগ পাওয়া গেছে। এই সকল বিবেচনায় পৃথিবীব্যাপি সকল দেশেই কয়লাভিত্তিক প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবল¤^ন করা হয়। সা¤প্রতিককালে এই ধরনের প্রকল্প এড়িয়ে চলার চেষ্টাটাই বেশি চোখে পড়ে।

আর্থিক ও মর্যাদাগত বিপর্যয়
এই প্রকল্পের অর্থায়ন করবে ১৫% পি ডি বি, ১৫% ভারতীয় পক্ষ আর ৭০% ঋণ নেয়া হবে। যে নীট লাভ হবে সেটা ভাগ করা হবে ৫০% হারে। উৎপাদিত বিদ্যুৎ কিনবে পি ডি বি। বিদ্যুতের দাম নির্ধারিত হবে একটা ফর্মুলা অনুসারে। কী সে ফর্মুলা? যদি কয়লার দাম প্রতি টন ১০৫ ডলার হয় তবে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ এর দাম হবে ৫ টাকা ৯০ পয়সা এবং প্রতি টন ১৪৫ ডলার হলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ৮ টাকা ৮৫ পয়সা। অথচ দেশীয় ওরিয়ন গ্রæপের সাথে মাওয়া, খুলনার লবণছড়া এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারাতে যে তিনটি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের যে চুক্তি হয়েছে পি ডি বির সাথে সেখানে সরকার মাওয়া থেকে ৪ টাকায় প্রতি ইউনিট এবং আনোয়ারা ও লবন চড়া থেকে ৩ টাকা ৮০ পয়সা দরে বিদ্যুৎ কিনবে। সরকার এর মধ্যেই ১৪৫ ডলার করে রামপালের জন্য কয়লা আমদানির প্রস্তাব চ‚ড়ান্ত করে ফেলেছে। তার মানে ৮ টাকা ৮৫ পয়সা দিয়ে পি ডি বি এখান থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনবো সেটা নিশ্চিত। কত লজ্জাজনক কথা, প্রকল্পে ১৫% বিনিয়োগে ভারতীয় মালিকানা ৫০%। বিদ্যুতের দাম পড়ছে দ্বিগুণেরও বেশি। উচ্ছেদ হচ্ছে ৭৫০০ পরিবার। কৃষিজ সম্পদ হারাচ্ছে দেশ। পরিবেশ বিপর্যয় হচ্ছে বাংলাদশে কিন্তু ৫০% শতাংশ মালিকানা ভারতীয় কোম্পানির?

লেখক
কেন্দ্রীয় তথ্য-গবেষণা ও প্রচার সম্পাদক
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন

সম্পর্কিত কার্যক্রম

সম্পর্কিত কার্যক্রম

সদস্য ফরম

নিচে তথ্যগুলো দিয়ে পাঠিয়ে দিন