সংবাদ/বিবৃতি

The superiority of Muslims remain in” establishing truth and resisting against injustice”. It is a holy duty for a Muslim to do this work with his/her level best . Especially, students are perfect soldiers for this work. That is why, students are active and effective manpower of a country and a nation.

সূরা ফাতেহা’র ধারাবাহিক দারস (৩)
-মুফতি আবদুর রহমান গিলমান

“সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআ’লার জন্য যিনি সমস্ত জাহানের প্রতিপালক।” (সূরা ফাতিহা : ০১)

রাব্বুল আলামীন গত সংখ্যায় সূরায়ে ফাতেহার ‘আলহামদুলিল্লাহি’ পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত অলোচনা হয়েছে। এ সংখ্যায় রাব্বুন শব্দ নিয়ে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ। রব শব্দটি আল্লাহ তা’আলার একটি গুণবাচক নাম। কোন কোন উলামায়ে কিরাম একে ‘ইসমে আ’জম’ ও বলেছেন।(তাফসীরে কুরতুবী) এর দ্বারা আল্লাহ তা’আলার পবিত্রতা ও বড়ত্ব বর্ণনা করা হয়। পবিত্র কুরআনুল কারীমে এই শব্দটির আলোচনা এসছে প্রায় ৯০০ এর অধিক স্থানে। আ¤ি^য়ায়ে কিরাম আলাইহিমুস সালাম এবং নেক বান্দাদের অধিকাংশ দোয়া এই রব (রাব্বানা) শব্দ দ্বারা বর্ণিত হয়েছে। রব শব্দের শাব্দিক অর্থ লালনপালন করা, প্রতিপালন করা, মালিক, সর্দার ইত্যাদি। পারিভাষিকভাবে রব বলা হয়, ‘কোন বস্তুকে তার সমস্ত মঙ্গলামঙ্গলের প্রতি লক্ষ্য রেখে ধীরে ধীরে বা পর্যায়ক্রমে সামনে অগ্রসর করে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দেওয়া’। (মা’আরেফুল কুরআন)

রব শব্দটি আল্লাহ তা’আলার জন্যই ব্যবহার হয়। তবে ইযাফাত (স¤^ন্ধ) এর সাথে আল্লাহ ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রেও ব্যবহার হয়। যেমন, রাব্বুদ্দার (এই বাড়ির মালিক) ইত্যাদি। তার কারণ হলো, প্রত্যেকটি প্রাণী বা সৃষ্টিই প্রতিপালিত হওয়ার মুখাপেক্ষী, তাই সে অন্যের প্রকৃত প্রতিপালনের দায়িত্ব নিতে পারে না।

আমরা রবের যে পারিভাষিক অর্থ আলোচনা করেছি, এই অর্থের ব্যাপকতার কারণে আল্লামা ইবনুল কাইয়িম রহ. রাব্বুল আলামীন এর ব্যাখ্যায় রবের অনেকগুলো অর্থ বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাব্বুল আলামীন অর্থাৎ সমস্ত জাহানের প্রতিপালক তার অর্থ হলো, ১. তিনি সমস্ত জাহানের ব্যবস্থাপক, ২. কর্তৃত্বশীল, ৩. সৃষ্টিকর্তা, ৪. রিযিকদাতা, ৫. বিধানদাতা, ৬. জীবনদাতা, ৭. মৃত্যুদাতা, ৮. মর্যাদাদাতা, ৯. লাঞ্ছনাকারী, ১০. দাতা, ১১. সঙ্কোচনকারী, ১২. প্রতিরোধকারী ইত্যাদি। রবের এই অর্থগুলোকে অস্বীকার করা আল্লাহ তা’আলার রবুবিয়্যাত বা প্রভুত্বকে অস্বীকার করার নামান্তর। -আদ দুরারুস সানিয়্যাহ (ইন্টারনেট)
মি¤েœ আমরা আল্লামা ইবনুল কাইয়িম রহ. প্রদত্ত¡ রবের প্রত্যেকটি অর্থের ওপর সামান্য আলোকপাত করবো ইনশাআল্লাহ।

১. তিনি সমস্ত জাহানের ব্যবস্থাপক
নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলে যত প্রাণী বা বস্তু রয়েছে, তার সবকিছুর নিয়ন্ত্রক এবং ব্যবস্থাপক একমাত্র আল্লাহ তা’আলা। সমস্ত প্রাণীর চলা-ফেরা, সকল বস্তুর নড়া-চড়া এমনকি বৃক্ষের পাতা ঝরে পড়া পর্যন্ত তাঁর নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবস্থাপনার অধীনে রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘তিনি আকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত সমস্ত কাজের ব্যবস্থাপক’। (সূরা সাজদাহ-০৫)

২. কর্তৃত্বশীল
দুনিয়া এবং আখিরাতের সকল কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহ তা’আলার। আজকে যারা দুনিয়ায় সামান্য ক্ষমতার অধিকারী হয়ে নিজেদের অবৈধ কর্তৃত্ব জাহির করছে, আঙ্গুলের হেলায় আর চোখের ইশারায় যারা অহরহ অন্যায় করে যাচ্ছে, তাদের স্মরণ রাখতে হবে- এই কর্তৃত্ব কিছুই নয়। দুটি চক্ষু বন্ধ হয়ে গেলে একটি আঙ্গুল হেলানোরও আর ক্ষমতা থাকবেনা। আল্লাহ তা’আলার কর্তৃত্ব সম্পর্কে কুরআনুল কারীমে ইরশাদ হচ্ছে, ‘অগ্র-পশ্চাতের সকল কাজ (কর্তৃত্ব) আল্লাহর হাতেই’। (সূরা লুকমান-০৪)

৩. সৃষ্টিকর্তা
মানুষসহ সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা একমাত্র আল্লাহ তা’আলা। যেখানে অণু থেকে অণু পরিমাণ কোন বস্তুও আষ্কিারক ব্যতীত আবিষ্কার হতে পারে না, সেক্ষেত্রে এই বিশাল আসমান-যমীন, গ্রহ-নক্ষত্র, গাছ-পালা, তৃণ-লতা, পশু-পাখি ইত্যাদি কিভাবে একজন ¯্রষ্টা ব্যতীত এমনিতেই সৃষ্টি হতে পারে? মানুষের এই এই সুনিপুণ গঠন, সুন্দর অবয়ব একজন সুদক্ষ কারিগর ব্যতীত কিভাবে তৈরি সম্ভব? আর সেই সুদক্ষ কারিগরই হলেন মহান রাব্বুল আলামীন। যারা প্রাকৃতিকবাদী এবং ডারউইনের মতবাদে বিশ্বাসী, যারা মনে করে সবকিছুর সৃষ্টি কোন স্রষ্টা ব্যতিত এমনিতেই হয়ে গেছে, তারা আল্লাহ তা’য়ালার যে কোন সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করলেই তাতে স্রষ্টার পরিচয় লাভ করবে। আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ কররেন, ‘তিনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনিই সব কিছুর স্রষ্টা। অতএব, তোমরা তাঁরই ইবাদত কর। তিনি প্রত্যেক বস্তুর কার্যনির্বাহী’। (সূরা আন’আম-১০২)

৪. রিযিকদাতা
জলে-স্থলে যত প্রকার প্রাণী রয়েছে, সকল প্রাণীর রিযিকের যথাযথ ব্যবস্থা করেন মহান রাব্বুল আলামীন। আমরা কি কখনও চিন্তা করে দেখেছি, আমাদের গৃহপালিত যে পশুটি আছে, তার রিযিক আল্লাহ তা’আলা দুনিয়াতে সৃষ্টি করে রেখেছেন। আমরা শুধু তা সংগ্রহ করে তার সামনে উপস্থাপন করি। এতেই আমাদের কি পরিমাণ কষ্ট করতে হয়! কিন্তু বন-জঙ্গলে, সমুদ্রে যে অসংখ্য প্রাণী বিচরণ করছে, তাদের রিযিক কে ব্যবস্থা করছে? নিশ্চয়ই রাব্বুল আলামীন। যেহেতু রিযিকের দায়িত্ব মহান রবের যিম্মায়, তাই রবের নাফরমানী করে রিযিকের জন্য এদিক সেদিক ছোটাছুটি করার কোন প্রয়োজন নেই। রিযিকের জন্য নিজের রাষ্ট্রের স্বাধানীতা-সার্ব ভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে অন্য রাষ্ট্রের গোলামী আর পদলেহনেরও কোন প্রয়োজন নেই। রিযিকের দায়িত্ব প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই, তবে সবার রিযিকের দায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন, তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় সমাপিত হয়। সবকিছুই এক সুবিন্যস্ত কিতাবে রয়েছে। -সূরা হুদ-০৬ অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে- ‘আল্লাহ তা’আলাই তো রিযিকদাতা, শক্তির আধার, পরাক্রান্ত’। (সূরা যারিয়াত-৮২)

দারসটির পিডিএফ ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন

সম্পর্কিত কার্যক্রম

সম্পর্কিত কার্যক্রম

সদস্য ফরম

নিচে তথ্যগুলো দিয়ে পাঠিয়ে দিন