ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, সেক্যুলার শিক্ষানীতি, প্রস্তাবিত শিক্ষাআইন জাতিবিনাশী সিলেবাস বাতিলে প্রয়োজনে কাফনের কাপড় নিয়ে মাঠে নামবো। তবুও সেক্যুলার শিক্ষা বিরানব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে চলতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, দেশ চরম সঙ্কটে নিপতিত। কতিপয় উগ্র হিন্দু ও নাস্তিক্যবাদী সরকারের ছত্রছায়ায় ইসলাম ও মুসলমানের নাম-নিশানা মুছে দিতে উঠেপড়ে লেগেছে। তারাকৌশলে সিলেবাসে নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদ ঢুকিয়ে দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধর্মহীন বানানোর পাঁয়তারা করছে। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে মুসলমানদের অপ্রয়োজনীয় শিক্ষা সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত করে গরুকে মা সম্বোধন শিখিয়ে কোমলমতি শিশুদের ঈমান ধ্বংস করে হিন্দুত্ববাদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সরকার মুসলমানিত্ব ধ্বংস করে হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না। তিনি বলেন, আমরা জানি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায় সময়ই বলে থাকেন আমি মুসলমান, ধর্মের উপর আঘাত করলে আমারও গায়ে লাগে। কাজেই ধর্ম ও ইসলাম নিয়ে কটুক্তি করলে ছাড় দেয়া হবে না। অপরদিকে নাস্তিক্যবাদ ও ধর্মহীন সিলেবাস দ্বারা মুসলমানিত্ব ধ্বংস করে দিচ্ছে এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, উলামায়ে কেরাম মাঠে নামলে নাস্তিক-মুরতাদ ও ধর্মদ্রোহীরা এক মুহুর্তও টিকে থাকতে পারবে না। পীর সাহেব চরমোনাই ২৭ মে ঘোষিত জাতীয় মহাসমাবেশ সফলের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর কাজী বশির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ-এর ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বেফাকের সহ-সভাপতি আল্লামা আশরাফ আলী, বেফাকের শিক্ষা সচিব আল্লামা শিব্বির আহমদ, ইসলামী আন্দোলনের সংগঠনের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম ও মাওলানা আবদুল আউয়াল পীর সাহেব খুলনা, আইম্মা পরিষদ আহবান ও বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ড. মওলানা ঈসা শাহেদী, মুহাম্মদ আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, ড. অধ্যাপক মোস্তফা তারেকুল হাসান, জামিআ কারীমিয়া রামপুরার শায়খুল হাদীস মাওলানা মকবুল হোসাইন, নোয়াখালী প্রতিনিধি মুফতী মুহাম্মদ আছেম, গাজীপুর প্রতিনিধি মাওলানা হাবিবুর রহমান মিয়াজী, আফতাব নগর মাদরাসার মুহতামিম মুফতী মোহাম্মদ আলী,জাতীয় তাফসীর পরিষদের চেয়ার্যান মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাদারীপুর প্রতিনিধি মাওলানা আলী আহমদ চৌধুরী, পীর সাহেব চন্ডিবর্দী, নরসিংদীর প্রতিনিধি মুফতী মকবুল হোসেন, মাওলানা আতাউর রহমান আরেফী, মুফতী কেফায়েতুল্লাহ কাশফী, মুফতী মাহমুদুর রহমান, মুফতী হেমায়েতুল্লাহ প্রমুখ। প্রতিকূল আবহাওয়া সত্তে¡ও বিপুল সংখ্যক ওলামায়ে কেরাম অংশ গ্রহণ করেন।
নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত না নিতে পারলে দেশ অচীরেই ৪৭ পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে যাবে। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলামবিরোধী সকল চক্রান্ত রুখে দিতে হবে।
বেফাক বোর্ডের সহ-সভাপতি আল্লামা আশরাফ আলী বলেন, চলমান আন্দোলনের সাথে সকল ওলামায়ে কেরাম একমত। কওমী শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন। কিন্তু মুসলমানদের মৌলিক শিক্ষা ও আসল শিক্ষাই কওমী শিক্ষা। মুর্খরাই কওমী শিক্ষার বিরুদ্ধে কথা বলে। তিনি বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর অপসারণ দাবি করেন। তিনি নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা বাতিলে প্রয়োজনে সম্মিলিতভাবে কর্মসুচী দেয়ার আহবান জানান। মানুষ কঠিন থেকে কঠিন কর্মসুচী চায়।
আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী বলেন, ড. কালিদাস বৈদ্যের নীতি ও আদর্শের বাস্তবায়ন করতেই বর্তমান সিলেবাস করা হয়েছে। এই ধর্মবিনাশী শিক্ষানীতি বাতিল না করে কেউ ঘরে যাবো না।
ড. ঈসা শাহেদী বলেন, ধর্মবিনাশী সিলেবাসের মাধ্যমে ইসলাম ও ইসলামী তাহজীব তামাদ্দুন ধ্বংস করছে। সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত বাস্তবায়ন করে মুসলমানিত্ব ধ্বংস ও হিন্দুত্ববাদ কায়েম করতে চায়। এধরণের চক্রান্ত রুখে দিতে হবে।
বেফাক বোর্ডের প্রশিক্ষণ সচিব শিব্বির আহমদ বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী ইশতেহারে কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী আইন করবে না বলে ওয়াদা করেও এখন সিলেবাসের মাধ্যমে পুরো জাতিকে নাস্তিক ও হিন্দু বানাতে চায়। এ ধরনের দ্বিমুখি নীতি পরিহার করতে হবে।