“হে যুবক! চলো এগিয়ে যাই হাতে হাত রেখে সংগ্রামে সংগ্রামে”
রহমাতুল্লাহ বিন হাবিব
প্রথম পর্ব
পৃথিবীতে ইসলামের আগমন হয়েছে মানব জাতিকে সৃষ্টির গোলামী থেকে মুক্ত করে সৃষ্টিকর্তার আরাধনায় নিয়োজিত করতে, বৈষম্য ও অনাচার থেকে মুক্ত করে ন্যায় ও ইনসাফের রাজ্য কায়েম করতে। তাই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলামের বাণী প্রচার শুরু করলে কর্তৃত্বকারী ও স্বার্থপর গোষ্ঠী তাতে বাধা হয়ে দাড়িয়েছিল। সাধারণ মানুষ ক্ষমতাসীনদের ভয়ে ইসলাম গ্রহণ করতে পারতো না। যারাই বুকে সাহস নিয়ে ইসলাম গ্রহণ করত, তাদের উপর নেমে আসত অমানবিক নির্যাতনের ষ্টিম রোলার। হুজুর সা. ও তার অনুসারীদের ওপর নির্যাতনের সীমা ছাড়িয়ে গেলে এক পর্যায়ে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ইয়াসরিবে হিজরত করার নির্দেশ আসে। সেখানে স্থানীয় বিভিন্ন ধর্মের বাসিন্দাদের নিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দলীল প্রণয়ন করলেন ইসলামের নবী সা.। বিশ্বকে তিনি উপহার দিলেন ইতিহাসের প্রথম লিখিত শাসনতন্ত্র। কিন্তু অবিশ্বাসী দুরাচার সম্প্রদায় কিছুতেই শান্তিতে থাকতে দেয়নি মুসলমানদের। তাই তাদেরকে প্রতিরোধের জন্য এবং ইসলামকে টিকিয়ে রাখার জন্য সংগ্রাম শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে মুসলমানদের সশস্ত্র সংগ্রামের অনুমতি মিলে। শুরু হয় সত্য মিথ্যার দ্বন্দ্বে নতুন যাত্রা।
সর্বপ্রথম গুরুত্বপূর্ণ মোকাবেলা হয় বদর প্রান্তরে। মাত্র তিনশত তেরজন প্রায় নিরস্ত্র রসদহীন বাহিনী নিয়ে আল্লাহর নবী সা. প্রায় এক হাজার অস্ত্র-সস্ত্রে সুসজ্জিত যোদ্ধার বিশাল বাহিনীর প্রতিরোধে অবতীর্ণ হন। সম্পূর্ণ অসম এ যুদ্ধের পরিণতি অভাবনীয় হয়ে দাড়ায়। আল্লাহর খাছ গায়েবী সাহায্যে ক্ষুদ্র শক্তিহীন দলটি বিপুল বিজয় অর্জন করে। আর শোচনীয় পরাজয় বরণ করে দাম্বিক আবু জাহেলের নেতৃত্বাধীন শক্তিশালী বিশাল বাহিনী। বদর প্রান্তরে রচিত হয় মানব সভ্যতার ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়। কিন্তু সংগ্রাম থেমে থাকেনি। চলে অবিরাম অবিরত। এরপর ওহুদ, খন্দক ও হুনাইনসহ অনেক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। অষ্টম হিজরিতে আল্লাহর মেহেরবানীতে মক্কা নগরীতে গণবিপ্লব সাধিত হয়। মক্কা পরিণত হয় একটি ইসলামী রাষ্ট্রে। পত পত করে উড়তে শুরু করে ইসলামের পতাকা। যে পবিত্র ভূমি থেকে হুজুর পাক সা. ও সাহাবায় কেরাম রা. হিজরত করে অন্য কোথাও চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন সেখানে তারা ফিরে এলেন বিজয়ীর বেশে। এরই ধারাবাহিকতায় আরব উপদ্বীপে পৌত্তলিকতার অবসান ঘটে। প্রতিষ্ঠিত হয় এক অদ্বিতীয় মহান প্রভুর শান্তিপূর্ণ বিধান।