সংবাদ/বিবৃতি

The superiority of Muslims remain in” establishing truth and resisting against injustice”. It is a holy duty for a Muslim to do this work with his/her level best . Especially, students are perfect soldiers for this work. That is why, students are active and effective manpower of a country and a nation.

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা।

বিষয় : শিক্ষানীতি ২০১০ বাতিল ও শিক্ষা আইন ২০১৬ সংশোধন প্রসঙ্গে।

স্মারকলিপি

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
বাংলাদেশ শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশ। এদেশে যে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হবে তা অবশ্যই সংখ্যাগরিষ্ঠের চিন্তা-চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হল আমাদের শিক্ষানীতি, শিক্ষা আইন তথা শিক্ষাব্যবস্থাকে ধর্মনিরপেক্ষ করার নামে হিন্দুত্ববাদের মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে মুসলিম চিন্তা-চেতনার পরিবর্তে হিন্দুয়ানি সংস্কৃতিতে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে।

মহোদয়,
বর্তমান সরকার তথা শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত শিক্ষা নীতিমালায় ধর্মীয় শিক্ষার ক্ষেত্রে বিজ্ঞ আলেম, পণ্ডিত ও গ্রহণযোগ্য কোন প্রতিনিধিকে রাখা হয়নি। যার দরুন শিক্ষা আইনে প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষাকে অবহেলিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আমরা বিশ্বাস করি সুশিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড; যার মাধ্যমে মানুষ তাদের চিন্তা-চেতনাকে লালন করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তবতা হল বর্তমান পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে সুশিক্ষা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। সর্বশেষ, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক তৈরিকৃত সিলেবাসের গদ্য, সাহিত্য ও বিভিন্ন ভ্রমণ কাহিনীতে এমন কিছু বিষয়ের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে যা ধর্মনিরপেক্ষতা নয় বরং ইসলাম বির্বজিত, ইসলাম বিদ্বেষী এমনকি অনেক ক্ষেত্রবিশেষে পৌত্তলিক বিশ্বাস ও সংস্কৃতির বহি:প্রকাশ। এই পাঠ্যপুস্তক থেকে শিক্ষা লাভ করার মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম শিক্ষার্থীরা কোনভাবেই মুসলিম ভাবধারার সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে না।

বর্তমান পাঠ্যসূচিতে প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা বইয়ে গদ্য ও পদ্যের সংখ্যা ১৯৩টি। আমরা লক্ষ্য করেছি, এসব গদ্য-পদ্যের মধ্যে হিন্দু লেখক ৮১জন ও নাস্তিক তথা আল্লাহকে বিশ্বাস করে না এমন লেখক ৫৬জন। শতকরা হিসেবে মোট গদ্য ও পদ্যের সংখ্যা অনুপাতে হিন্দু ও নাস্তিক লেখকের লেখা প্রায় ৭১% আর মুসলিম লেখকের লেখা মাত্র ২৯%; যা ৯০ ভাগ মুসলামানদের চিন্তা-চেতনাকে প্রচণ্ড আঘাত করে।

পাঠ্যপুস্তকে বাংলা বই থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে-
১. ২য় শ্রেণি : ‘সবাই মিলে করি কাজ’ শিরোনামে মুসলমানদের শেষ নবীর সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত।
২. ৩য় শ্রেণি : ‘খলিফা হযরত আবু বকর’ শিরোনামে একটি সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত।
৩. ৪র্থ শ্রেণি : খলিফা হযরত ওমর এর সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত। পৃষ্ঠা : ১/৩
৪. ৫ম শ্রেণি : ‘বিদায় হজ্জ’ নামক শেষ নবীর সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত।
৫. ৫ম শ্রেণি : বাদ দেওয়া হয়েছে কাজী কাদের নেওয়াজের লিখিত ‘শিক্ষা গুরুর মর্যাদা’ নামক একটি কবিতা। যা বাদশাহ আলমগীর মহত্ব বর্ণনা উঠে এসেছে। এবং শিক্ষক ও ছাত্রের মধ্যে আদব কেমন হওয়া উচিত তা বর্ণনা করা হয়েছিলো।
৬. ৫ম শ্রেণি : শহীদ তিতুমীর নামক একটি জীবন চরিত। এ প্রবন্ধটিতে শহীদ তিতুমীরের ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘটনা উল্লেখ ছিলো।
৭. ৬ষ্ঠ শ্রেণি : ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ লিখিত ‘সততার পুরুষ্কার’ নামক একটি ধর্মীয় শিক্ষণীয় ঘটনা।
৮. ৬ষ্ঠ শ্রেণি : মুসলিম দেশ ভ্রমণ কাহিনী- ‘নীলনদ আর পিরামিডের দেশ’।
৯. ৬ষ্ঠ শ্রেণি : মুসলিম সাহিত্যিক কায়কোবাদের লেখা ‘প্রার্থনা’ নামক কবিতাটি।
১০. ৭ম শ্রেণি : বাদ দেয়া হয়েছে মরু ভাষ্কর নামক শেষ নবীর সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত।
১১. ৮ম শ্রেণি : বাদ দেওয়া হয়েছে ‘বাবুরের মহত্ত¡’ নামক কবিতাটি।
১২. ৯ম-১০ম শ্রেণি : সর্ব প্রথম বাদ দেওয়া হয়েছে মধ্যযুগের বাংলা কবি শাহ মুহম্মদ সগীরের লেখা ‘বন্দনা’ নামক ধর্মভিত্তিক কবিতাটি।
১৩. ৯ম-১০ম শ্রেণি : এরপর বাদ দেওয়া হয়েছে মধ্যযুগের মুসলিম কবি ‘আলাওল’ এর ধর্মভিত্তিক ‘হামদ’ নামক কবিতাটি।
১৪. ৯ম-১০ম শ্রেণি : বাদ দেওয়া হয়েছে মধ্যযুগের মুসলিম কবি আব্দুল হাকিমের লেখা বঙ্গবানী কবিতাটি।
১৫. ৯ম-১০ম শ্রেণি : গোলাম মোস্তাফার লেখা জীবন বিনিময় কবিতাটি। কবিতাটিতে মোঘল বাদশাহ বাবর ও তারপুত্র হুমায়ুনকে নিয়ে লেখা।
১৬. ৯ম-১০ম শ্রেণি : কাজী নজরুল ইসলামের লেখা বিখ্যাত ‘উমর ফারুক’ কবিতা।

এর বদলে বাংলা বইয়ে প্রবেশ করেছে-
১. ৫ম শ্রেণি : স্বঘোষিত নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ লিখিত ‘বই’ নামক একটি কবিতা, যা মূলত মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন বিরোধী কবিতা।
২. ৬ষ্ঠ শ্রেণি : প্রবেশ করানো হয়েছে ‘বাংলাদেশের হৃদয়’ নামক একটি কবিতা। যেখানে রয়েছে হিন্দুদের দেবী দূর্গার প্রশংসা।
৩. ৬ষ্ঠ শ্রেণি : সংযুক্ত হয়েছে ‘লাল গরুটা’ নামক একটি ছোটগল্প। যা দিয়ে মুসলিম শিক্ষার্থীদের শেখানো হচ্ছে গরু হচ্ছে মায়ের মত, অর্থাৎ হিন্দুত্ববাদ।
৪. ৬ষ্ঠ শ্রেণি : অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে ভারতের হিন্দুদের তীর্থস্থান রাচি’র ভ্রমণ কাহিনী।
৫. ৭ম শ্রেণি : দলালু’ নামক গল্পে বাচ্চাদের শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে পাঠাবলীর নিয়ম কানুন।
৬. ৮ম শ্রেণি : পড়ানো হচ্ছে হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ ‘রামায়ন’ এর সংক্ষিপ্তরূপ।
৭. ৯ম-১০ম শ্রেণি : প্রবেশে করেছে ‘আমার সন্তান’ নামক একটি কবিতা। কবিতাটি হিন্দুদের ধর্মসম্পর্কিত ‘মঙ্গলকাব্যের অন্তর্ভূক্ত, যা দেবী অন্নপূর্ণার প্রশংসা ও তার কাছে প্রার্থনাসূচক কবিতা।
৮. ৯ম-১০ম শ্রেণি : অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে ভারতের পর্যটন স্পট ‘পালমৌ’ এর ভ্রমণ কাহিনী।
৯. ৯ম-১০ম শ্রেণি : পড়ানো হচ্ছে ‘সময় গেলে সাধন হবে না’ শিরোনামে বাউলদের বিকৃত যৌনাচার।
১০. ৯ম-১০ম শ্রেণি : ‘সাকোটা দুলছে’ শিরোনামের কবিতা দিয়ে ৪৭ এর দেশভাগকে হেয় করা হচ্ছে, যা দিয়ে কৌশলে ‘দুই বাংলা এক করে দেওয়া’ অর্থাৎ বাংলাদেশকে ভারতের অন্তর্ভূক্ত হতে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে।
১১. ৯ম-১০ম শ্রেণি : প্রবেশ করেছে ‘সুখের লাগিয়া’ নামক একটি কবিতা, যা হিন্দুদের রাধা-কৃষ্ণের লীলাকৃর্তণ।

মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়,
এই সিলেবাস অনুযায়ী পড়াশুনা করে আপনিও আজকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের শিক্ষামন্ত্রী হয়েছেন। আমরা লক্ষ্য করেছি, মুসলিম সাহিত্যিকদের লেখা পাঠ্যসূচি থেকে বাদ দিয়ে সেখানে সংযুক্ত করা হয়েছে হিন্দুদের দেব-দেবীর প্রসংশা ও প্রার্থনা এবং রাধা-কৃষ্ণের লীলাকীর্তন ইত্যাদি।

“শিক্ষা আইন ২০১৬”-এর প্রায় ৩২টি ধারা-উপধারা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বোধ-বিশ্বাস, ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে সাংঘর্ষিক। এই আইন কোন দেশপ্রেমিক ও ধর্মপ্রাণ কোন অভিভাবক মেনে নিতে পারেনা। এই “শিক্ষা আইন” বাস্তবায়ন হলে দেশ অনিশ্চিত গন্তব্য ও সংঘাতের দিকে ধাবিত হবে বলে আমরা মনে করি।

আমাদের দাবীসমূহ :
১. শিক্ষানীতি ২০১০ এবং তার আলোকে প্রণীত শিক্ষা আইন ২০১৬ এর খসড়া বাতিল করতে হবে।
২. প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাঠ্যপুস্তকে হিন্দুত্ববাদী ও ইসলাম বিদ্বেষী কবিতা, গল্প ও রচনাবলী শিক্ষা সিলেবাস থেকে বাদ দিতে হবে।
৩. শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকে ৯০ ভাগ জনগণের চিন্তা, বিশ্বাস ও মূল্যবোধের বহি:প্রকাশ ঘটাতে হবে।
৪. পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন কার্যক্রম বিজ্ঞ, দক্ষ শিক্ষাবিদ ও ইসলামী নেতৃবৃন্দের পরামর্শ নিতে হবে।

আমরা আশা করবো আপনি অবিলম্বে “শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন” বাতিলের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। নয়তো এদেশের তরুন ছাত্র-জনতাকে নিয়ে দূর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি যেকোন পরিস্থিতির জন্য সরকারকে তার দায়ভার গ্রহণ করতে হবে।

আল্লাহ আমাদের সকলকে ইসলাম দেশ ও মানবতার সেবায় এগিয়ে যাওয়ার তাওফিক দিন। আমীন।

মা’য়াসসালাম

2

…………………………………………………………………………………………….

…………………………………………………………………………………………….

নূরুল ইসলাম আল-আমীন
কেন্দ্রীয় সভাপতি
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন
তারিখ : ০৫/০৫/২০১৬ইং

ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন

সম্পর্কিত কার্যক্রম

সম্পর্কিত কার্যক্রম

সদস্য ফরম

নিচে তথ্যগুলো দিয়ে পাঠিয়ে দিন