নকীব সম্পাদকীয় : জুলাই-২০১৮ সংখ্যা
বাংলার চিরায়ত সৌন্দর্য নিয়ে আসে বর্ষা। বাংলা ষড়ঋতুর দ্বিতীয় ঋতু বর্ষাকাল। আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল। হিসেবের খাতায় দু’মাস হলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় চার মাস। বর্ষা এলে নদী-নালা, খাল-বিল জলে টইটম্বুর হয়ে যায়। মরা নদীতে জোয়ার আসে। বিলের জলে দেখা যায় শাপলার হাসি। নৌকায় চড়ে খাল-বিল পেরিয়ে বহুদূর চলে যাওয়া যায়। ঢেউয়ের তালে তালে ছলাৎ ছলাৎ শব্দে নেচে ওঠে মন। কখনো হঠাৎ আকাশজুড়ে মেঘের ঘনঘটা। আকাশ ছাপিয়ে বৃষ্টির ধারা নেমে আসে। বৃষ্টির জলে অবগাহনে মনে অফুরন্ত আনন্দের শিহরণ জেগে ওঠে। ঘরের টিনের চালে বৃষ্টির রিমঝিম ছন্দ শুনতে পাওয়া যায়। জানালা খুলে বিছানায় শুয়ে বৃষ্টির শীতল পরশ অনুভব করা যায়। বর্ষার জলে কাগজের নৌকা ভাসিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠে শিশুরা। অলস দুপুরে কৃষাণের কণ্ঠের মধুর সুর এক অলৌকিক আবেশ সৃষ্টি করে। বর্ষায় ফোটে কত কত ফুল। গাছে গাছে সমাহার।
বর্ষার যে ফুলগুলো আমাদের মনকে বিমোহিত করে তাহলো- কেয়া, কদম, কলাবতী, শাপলা, পদ্ম, ঘাসফুল, পানাফুল, কলমী ফুল, ঝিঙেফুল, হেলেঞ্চাফুল, কেশরদাম, পানি মরিচ, পাতা শেওলা, বনতুলসী, নলখাগড়া, ফণীমনসা, উলটকম্বল, কেওড়া, গোলপাতা, শিয়ালকাটা, কেন্দার এবং এছাড়া নানা রঙের অর্কিড।
বর্ষার এই স্নিগ্ধ রূপ, বৃষ্টির এই সোঁদা গন্ধ, গ্রামের এই সবুজ আস্তরণ ভাবুক মানুষের চোখ এড়াবার নয়। মুহূর্তের জন্য হলেও তার মন উদাস ব্যাকুল করে তোলে, সেই গায়ের পথে রাখালি বাঁশির সুর কিংবা রুপালি নদীর বুকে মাঝির ভাটিয়ালি গানের টান। আমাদের এই প্রিয় বাংলার এক মায়াময় দৃশ্য।
ঈদের ছুটি শেষে খুলেছে আমাদের প্রাণের দোয়ার। প্রাণের দোয়ার বলতে আমি বলছি- কওমী মাদরাসার কথা। তোমরা যারা কওমী মাদরাসায় পড়- এখন তোমাদের শুরু হলো নতুন বছর। অনেকের জন্য নতুন ঠিকানা। নতুন আর পুরোনো মিলে এ যেন এক আনন্দময় নতুন সংসার। দূরদুরান্ত থেকে আসা সকলের সাথে সকলের এক প্রাণের বন্ধন। মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়া। পড়া-লেখা, খাওয়া-দাওয়া, খেলা-ধুলা, ঘুম! হুজুরদের আদর- স্নেহ, শাসন! যেন এক মায়ের পরশ।
যাই হোক এই নতুন বছরে নকীবের পক্ষথেকে তোমাদের জন্য অনেক অনেক দুয়া ও শুভ কামনা। নতুন বছরে তোমাদের জীবন হোক আরো প্রানবন্ত- সুখময়, সুন্দর। তোমরাই আগামীর স্বপ্ন- আশার আলো। তোমাদের পথপানে তাকিয়ে মুক্তিকামী কোটি জনতা।
তাঁর ভালবাসায় সুবাসিত হোক
মন-প্রাণ-বিশ্বাস
-সম্পাদক